বসিলায় বাড়ি ভাংচুর ও জমি দখলের চেষ্টা, থানায় মামলা

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুর বছিলায় জোরপূর্বক অন্যের জমি দখলের চেষ্টা ও একটি বাড়িতে ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কয়েকজন দুর্বৃত্তের বিরুদ্ধে।

সোমবার রাতে এই ঘটনার পর হাজারীবাগ থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। এতে ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। থানা পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত মোহন নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে চক্রটি দখল বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অপরাধে মেতেছে।

ডিএমপির ধানমন্ডি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আবু তালেব বলেন, ‘ঘটনার দিন মাহবুবুর রহমান নামে একজনের জমি দখলের চেষ্টা করছিল দুর্বৃত্তরা। সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা ও সাইনবোর্ড ভাংচুর করা হয়। পরে আলী হোসেন নামে এক হাউজিং ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা হয়। এই ঘটনায় হাজারীবাগ থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। তাৎক্ষণিক পুলিশ মোহন নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।’

স্থানীয়রা বলছে, এই অপরাধীগ্রুপটি বসিলা, চাঁদ উদ্যানসহ আশপাশের এলাকায় এমন কোনো অপরাধ নেই যাতে জড়িত নেই। পূর্বের বিভিন্ন অপরাধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদেরকে গ্রেফতার করেছে। জামিনে বেরিয়ে একই অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। তাদের অত্যাচারে স্থানীয়রা অতিষ্ঠ। এই গ্রুপকে নেতৃত্ব দিচ্ছে কবির হোসেন নামে একজন। কবির, মোহনসহ এই গ্রুপের সবাই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেফতার তারেকুজ্জামান রাজীবের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমাদের টিম পাঠানো হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সবাই পালিয়ে যায়। পরে মোহনকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে আজ আদালতে তোলা হয়েছে।’

অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় যে দুটি মামলা হয়েছে; তাতে সাবেক কাউন্সিলর রাজীবকে আসামি করতে চেয়েও সেটা হয়নি। কারণ, রাজীব বিভিন্ন জায়গা থেকে তদবির চালিয়েছে। এমনকি বাদীদের ফোন করে হুমকি দিয়েছে, যাতে তারা কেউ মামলা না করেন। পরে পুলিশের ঊধ্বর্তনদের তৎপরতায় হাজারীবাগ থানায় মামলা হয়। ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেফতার আলোচিত কাউন্সিলর রাজীব জামিনে মুক্ত হবার পর মোহাম্মদপুরে ত্রাসের রাজনীতি শুরু করেছেন।

ভুক্তভোগী দুইজন যা বলছেন:

ভুক্তভোগী মাহবুবুর রহমান মামলার বলেন, তিনি ও আমার বোনের নামে বসিলায় ১৩ শতাংশ জমি ক্রয় সূত্রে মালিক। যা দীর্ঘদিন তাদের দখলে রয়েছে। কিছুদিন ধরে মো. কবির হোসেন ও তার ভাই মো. মুকুলের নেতৃত্বে মো. সাদেক, মোতালেব হোসেন, আক্তার হোসেন, মো. রিতু, মো. শাকিব, মো. মোহন মো. শাহিন, সোলেমান, রাসেল চৌকিদার, মো. বাবু, মো. রাফি ও মো. সেলিম জমিটি জোর পূর্বক দখল করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। বিভিন্ন সময় আমাকে ও আমার পরিবারকে ভয়ভীতি দিচ্ছিল। এরই জের ধরে গতকাল জায়গা ছেড়ে চলে যাবার জন্য হুমকি দেয়। এদিন ২০/২৫ জন জমি দখলের চেষ্টা করে এবং সেখানে থাকা সিসি ক্যামেরা, সাইনবোর্ড ও গেইট ভাংচুর করে। পরে ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।

এদিকে ভুক্তভোগী আরেক ব্যবসায়ী মো. আলী হোসেন বলেন, ‘কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা আমার বাড়িতে হামলা করেছে। আমি স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি। এরপরও কেন হামলা করল জানি না। বিষয় নিয়ে থানায় মামলা করেছি। একজন গ্রেফতার হয়েছে।’

তিনি বলেন, যারা হামলা করেছে তারা সাবেক কাউন্সিলর রাজীবের অনুসারী। কারণ, আমি যখন মামলা করতে থানায় ছিলাম তখন রাজীব আমাকে ফোন করে বলেছে, মামলা না করতে। তিনি সব মিমাংসা করে দিবেন।’

এসব বিষয়ে জানতে সাবেক কাউন্সিলর রাজীবকে তার একাধিক ব্যক্তিগত মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

 

ট্রেনের ধাক্কায় পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার:

রাজধানীর উত্তরার আজমপুর ৪ নম্বর সেক্টরে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে রেললাইন পার হওয়ার সময় ট্রেনের ধাক্কায় এসআই (উপ-পরিদর্শক) কেএম মনসুর আলী (৪৫) নিহত হয়েছেন। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) দক্ষিণখান থানায় কর্মরত ছিলেন।

রোববার(১৮ মে) সকালের দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায় রেলওয়ে থানা পুলিশ।

বিমানবন্দর রেলওয়ে পুলিশ ফাড়ির উপ-পরিদর্শক এস আই মোহাম্মদ আলী জানান, গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উত্তরার আজমপুর ৪ নম্বর সেক্টরের ১০ নম্বর রোডে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে রেললাইন পার হচ্ছিলেন। এ সময় দ্রুতগতির একটি ট্রেন তাকে ধাক্কা দিলে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে মারা যান তিনি।

তিনি আরও জানান, তিনি দক্ষিণখান থানায় এসআই হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নিহত কেএম মুনসুর আলী পুলিশের ৩৪ তম আউটসাইড ক্যাডেট এসআই পদে যোগদান করেছিলেন।

মনসুর আলী পল্লবীর বাইসারটেক ২৫/২ নম্বর বাসায় থাকতো। তিনি দুই সন্তানের জনক ছিলেন। তার স্ত্রী শিল্পি খাতুনও এসআই পদে গুলশান থানায় কর্মরত আছেন।

ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন বলেন, বিমানবন্দর রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রেললাইনের পাশে থাকা অবস্থায় ট্রেনের ধাক্কায় দক্ষিণখান থানার এসআই কেএম মনসুর আলী গুরুতর আহত হন। পরে তাকে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম