প্রধান শিক্ষকের সম্পদের পাহাড়; আয়ের উৎস কি?

স্টাফ রিপোর্টার:

রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বরে মডেল একাডেমির প্রধান শিক্ষক শুভাশিস কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক বনে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুধুমাত্র রাজধানীতে ফ্ল্যাট-জমিসহ গড়েছেন কয়েক কোটি টাকার সম্পদ। এছাড়া রাজবাড়ি ও ঝিনাইদহ জেলায় রয়েছে লাখ টাকার জমি। ব্যাংকে নগদ টাকা, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার বাজারে অর্ধ কোটি টাকার শেয়ারসহ বিভিন্ন ব্যবসায় বিনেয়োগ রয়েছে কোটি টাকা। অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাৎসরিক ১৪ লাখ ৯৩ হাজার ৬২০ টাকা বেতনে কর্মরত এই প্রধান শিক্ষকের ট্যাক্স ফাইলে রাজধানীর বসুন্ধরার বাড্ডায় ১ কাঠা জমি, মিরপুরের পল্লবিতে ৮২.৫০ অযুতাংশ জমি, পল্লবির টিচার্স কলোনীতেও রয়েছে একেটি প্লট। এছাড়া মিরপুর বাংলাকুঞ্জ,ভাটারা, প্লট-ফ্ল্যাট, রাজবাড়ী ও ঝিনাইদহেও জমি রয়েছে এই শিক্ষকের।সবমিলিয়ে ট্যাক্স ফাইলেই প্রায় ৩ কোটি টাকার হিসাব দিয়েছে তিনি।

এদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশনে এই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দায়ের করা এক অভিযোগে বলে হয়েছে, সরকারের ট্যাক্স ফাঁকি দিতে সম্পদের হিসাব গোপন করেছেন তিনি। ট্যাক্স ফাইলে উল্লেখ করা হয়নি রাজধানীর মিরপুরের টোলারবাগের ফ্ল্যাটের তথ্য। অথচ টোলারবাগ ফ্ল্যাট মালিক সমিতির গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন মডেল একাডেমির প্রধান শিক্ষক শুভাশিস কুমার বিশ্বাস। এছাড়াও বেশকিছু সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। দুদকে দায়ের করা অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, দুনীতিবাজ এই প্রধান শিক্ষকের রয়েছে একাধিক ফ্লাট, দামী গাড়ি, ব্যাংকে কোটি কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র, ডি.পি.এস, ৫০ লক্ষ টাকার শেয়ার ও বিভিন্ন জেলায় নামে বেনামে জমি।তিনি মডেল একাডেমিতে কর্মরত সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারিদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ধনী এবং সম্পদশালী বলেও পরিচয় প্রদান করেন। তিনি ঘুষ-দুর্নীতি ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নানা অনিয়ম করে থাকেন। স্কুলের প্রাপ্ত টিউশন ফ্রি, ভর্তি বানিজ্য, বেতন ভাতা, পরিক্ষার ফ্রি, ক্রীড়া ফ্রি, সেশন চার্জ, শিক্ষক-কর্মচারীদের নিকট থেকে মন্ত্রণালয় হতে আসা অডিট চলাকালীন প্রত্যেক শিক্ষক ও কর্মচারীদের এক মাসের এমপিও নেওয়া ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন নিয়োগ পরিক্ষায় ভাড়াসহ বিবিধ অনিয়ম করে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন।মিরপুর ১ এর উত্তর টোলারবাগে ১৯/ডি/৬, রোজ ভ্যালিতে ৩-১ নং ফ্লাট আছে তার। এছাড়া ২০/১৪/১ এ আছে আরও দুটি ফ্লাট। বাড্ডায় বসুন্ধরার ল্যান্ড হাউস প্রপার্টিতে এক কাঠা জমি আছে। মিরপুর পল্লবী বাউনিয়ায় ১৫ নং ওয়ার্ডে ৪২.৫০ অজুতাংশ জমি আছে যার দলিল নং ১২৩৯। বিজয় আবাসনে নির্মানাধীন ফ্ল্যাটের মূল্য আনুমানিক অর্ধ কোটি টাকা। মিরপুর পল্লবীর শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্ট এর ১/৪৪১ শেয়ার আছে ও জমি আছে তার। মিরপুরে জহুরাবাদ মৌজার বাংলা কুঞ্জতে জমি আছে দশমিক ৫৭২ শতক। ১২৩৯ নং দলিল অনুসারে ৯১.৬৬৬৬ অযুতাংশ জমিতে নির্মাণাধীন ভবনের কাজের ব্যয়সহ জমি রেজিস্ট্রি খরচ দেখানো হয়েছে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা। এবিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে মিটিয়ে আছেন বলে ফোন কেটে দেন।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে ড.আবু সুুফিয়ানের নেতৃত্বে চলছে সরকারী টাকা হরিলুট!

স্টাফ রিপোর্টার॥

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে বর্তমানে কোন জবাবদিহিতা না থাকায় চলছে সরকারী টাকা হরিলুটের মহোতসব। যে যেভাবে পারছেন সে সেভাবেই লুটেপুটে খাচ্ছেন। বর্তমান অধিদপ্তরে যে সকল পরিচালক কর্মরত আছেন তাদের প্রত্যেকেই বর্তমান ভারপ্রাপ্ত মহা পরিচালক ড. আবু সুফিয়ানের একাডেমিক সিনিয়র বা রুমমেট। যার ফলে সিনিয়ররা তার রুমে সচারাচর যান না এবং রুমমেটরা তার কোন কমান্ড মানেন না।
চলতি অর্থ বসরে উপজেলা, জেলা , বিভাগ এবং বিভিন্ন দপ্তরে বিভিন্ন খাতে যে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে তার ৬০% অর্থ সরকারের কোন কাজেই আসে নাই । মালামাল না কিনে, প্রশিক্ষন না দিয়ে, শুধু ভূয়া বিল/ ভাউচারের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে সমুদয়় টাকা আতনসাৎ করা হয়েছে।
একাধিক সুত্রে জানা যায়, চলতি মাসে জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস , ঢাকার দপ্তরে প্রায় ১২/১৩ লক্ষ টাকা এবং ঢাকার মেট্রোর দপ্তরে প্রায় ২.২০ হাজার টাকা ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে উত্তোলন করে সমুদয় টাকা আতনসাৎ করা হয়েছে। যা বিল ভাউচার এবং কেনা মালামাল সরেজমিনে নীরিক্ষা করলেই প্রমানিত হবে। এছাড়া খোদ অধিদপ্তরে চলতি বছরে গ্যারেজ মেরামতের নামে ২৫ লক্ষ টাকা, খাওয়া- দাওয়া ( আপ্যায়ন) বাবদ ৪০, লক্ষ টাকা , কম্পিউটার রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ৮ লক্ষ টাকা, কম্পিউটারের আনুষাংগিক যন্ত্রপাতি / কাগজ , কালি কেনা বাবদ ১০ লক্ষ টাকা, মুদ্রণ বাবদ ১০ লক্ষ টাকা, বিভিন্ন ডিসপ্লে,ব্যনার তৈরী বাবদ ৩০ লক্ষ টাকা,প্রশিক্ষন সামগ্রী ও প্রশিক্ষণ বাবদ ১০ লক্ষ টাকা, বিভিন্ন প্রিন্টিং মেটিরিয়ালস বাবদ ২০. লক্ষ টাকা, এসি, ফটোকপিয়ার মেরামত বাবদ ৫ লক্ষ টাকা , আসবাব পত্র কেনা বাবদ ১৫ লক্ষ টাকা, বিভিন্ন পাবলিকেশন কেনা বাবদ ৯ লক্ষ টাকা খরচ দেখান হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কোন গ্যারেজ মেরামত বা নির্মাণ করা হয় নি। কম্পিউটারের জন্য কোন খরচ করা হয়নি । কারন, বিভিন্ন প্রকল্প হতে এ সকল কাজ করা হয়ে থাকে।
কোন আসবাব পত্র , বই- পাবলিকেশন, ইত্যদি কেনা হয়নি। খাওয়া বাবদ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য সর্বমোট ১০ লক্ষ টাকা খরচ না হলেও ৪০ লক্ষা টাকার বিল উঠানো হয়েছে। একইভাবে কথিত সিগনেফিসেনট দিন উপলক্ষে ফেসটুন, ব্যনার বাবদ ৫ লক্ষ টাকা খরচ না হলেও ৩০ লক্ষ টাকা খরচ দেখানো হয়েছে বলে অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন।
অধিদপ্তরের দেশ প্রেমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা মন্ত্রণালয়ের উর্ধ¦তন কর্মকর্তাদের দ্বারা অভিযোগগুলি তদন্তের দাবী তুলেছেন।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড,আবু সুফিয়ানের সাথে এবং পরিচালক বাজেটের সাথে কথা বলার জন্য একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোন রেসপন্স পাওয়া যায়নি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম