প্রতিদিনের যেসব অভ্যাস ফুসফুসের ক্ষতি করে

স্টাফ রিপোর্টার:

আমাদের ফুসফুস অনবরত কাজ চালিয়ে যায়। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক জিনিস নীরবে ফুসফুসের ক্ষতি করে, কিন্তু সেই ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি না হওয়া পর্যন্ত তা আমাদের চোখে পড়ে না। যে কারণে আমাদের বেশিরভাগই ফুসফুসের যত্ন নিতে শুরু করি না যতক্ষণ না আমরা সিঁড়িতে সহজেই উঠতে শুরু করি, শ্বাসকষ্ট, কাশি বা হাঁপাতে থাকি।

দূষণের চেয়ে কিছু দৈনন্দিন জিনিস ফুসফুসের বেশি ক্ষতি করে!

আপনি জেনে অবাক হতে পারেন যে কেবল ধূমপান বা ভারী দূষণই আমাদের ফুসফুসের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে না। এমন অনেক দৈনন্দিন জিনিস রয়েছে, যেগুলোতে আমরা মনোযোগও দিই না, সেসবই নীরবে আমাদের শ্বাসযন্ত্রের শক্তিকে প্রভাবিত করে। তবে আশার কথা হলো যে, বাড়িতে ছোট এবং নিয়মিত পরিবর্তন আমাদের ফুসফুসকে রক্ষা করতে পারে। কিছু দৈনন্দিন অভ্যাস পরিবর্তন করা থেকে শুরু করে ঘরোয়া প্রতিকার এই কাজে সহায়তা করতে পারে।

ঘরের ভেতরের বায়ু দূষণ

আমাদের বেশিরভাগই মনে করে দূষণ মানে বাইরের জিনিসপত্র যেমন ট্র্যাফিক ধোঁয়া, কারখানার ধোঁয়া, ধুলা ঝড় ইত্যাদি। কিন্তু আপনি কি জানেন যে, আপনার ঘরের বাতাস কনো কখনো বাইরের চেয়ে বেশি বিষাক্ত হতে পারে? অনেক বাড়িতে আগরবাতি, ধুপ জ্বালানো হয়; মশার কয়েল, স্প্রে, রাসায়নিক ক্লিনার এবং অ্যারোসল-ভিত্তিক রুম ফ্রেশনার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সেইসঙ্গে গৃহসজ্জার সামগ্রী, পোষা প্রাণির ইত্যাদিও সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। এই সবই একটি বিষাক্ত ককটেল তৈরি করে যা আপনার ফুসফুসকে দিনের পর দিন ক্ষতিকর নিঃশ্বাস নিতে বাধ্য করে। এবং সবচেয়ে খারাপ দিক হলো, আমরা মনে করি আমরা আমাদের ঘরের ভেতরে নিরাপদ। যদি আপনি কোনো কারণ ছাড়াই শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন বা গলা ব্যথা বা নাক বন্ধ করে ঘুম থেকে ওঠেন, তাহলে অবাক হবেন না – আপনার ঘরের ভেতরের বাতাসই হতে পারে খলনায়ক।

রান্নাঘরের ধোঁয়া

বিভিন্ন পাত্রে রান্না করার ফলে সূক্ষ্ম কণা এবং গ্যাস তৈরি হয় যা শ্বাসনালীকে জ্বালাতন করে। চিমনি বা এক্সজস্ট ফ্যান ছাড়া এই ধোঁয়া রান্নাঘরে এবং এমনকী পুরো বাড়িতে ছড়িয়ে যায়। যদি কখনো কিছু ভাজার সময় কাশি শুরু হয় বা ডিপ-ফ্রাই করার সময় চোখ দিয়ে পানি পড়েন, তবে বুঝবেন আপনার ফুসফুস সেই ধোঁয়ার জ্বালাপোড়ার প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।

সারাদিন বসে থাকা

আমরা জানি সারাদিন বসে থাকার ফলে আমাদের পিঠ এবং ওজনের ওপর প্রভাব পড়ে, কিন্তু আপনি কি জানেন এটি ফুসফুসের উপরও প্রভাব ফেলে? যখন খুব বেশি সময় ধরে বেশিক্ষণ নড়াচড়া না করে বসে থাকেন, তখন শ্বাস-প্রশ্বাস অগভীর হয়ে যায়। এর অর্থ হলো, ফুসফুস সম্পূর্ণরূপে প্রসারিত হওয়ার বা পর্যাপ্ত অক্সিজেন গ্রহণ করার সুযোগ পায় না। ধীরে ধীরে এটি ফুসফুসের স্থিতিস্থাপকতা এবং শক্তি কমিয়ে দেয়। আপনি এমন কার্যকলাপের সময় হাঁপাতে পারেন যা আপনাকে আগে কখনো বিরক্ত করেনি- যেমন সিঁড়ি বেয়ে ওঠা বা দ্রুত হাঁটা। এর মানে যে কেবল আপনার স্ট্যামিনা কমে যাচ্ছে তা না, এটি আপনার ফুসফুসের ক্ষমতা কমে যাওয়ারও প্রকাশ।

ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত যতটুকু পানি পান করা উচিত?

স্টাফ রিপোর্টার:

চলছে পবিত্র রমজান মাস। এ মাসে দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকতে হয় বলে পানিশূন্যতার আশঙ্কা থেকে যায়। আবার আবহাওয়া সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তপ্ত হয়ে উঠছে। এ অবস্থায় দিনে যেন পানি তৃষ্ণা না পায় বা পানিশূন্যতার সমস্যা দেখা না দেয়, এজন্য সাহরি বা ইফতারে বেশি পানি পান করা হয়।

স্বাভাবিকভাবেই সুস্থ থাকার জন্য প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রে পানির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। কিন্তু রমজান মাসে কীভাবে বা কতটুকু পানি পান করতে হবে, সেটি অনেকেরই অজানা। এবার তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।

একজন মানুষের ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত অন্তত দুই লিটার পরিমাণ বিশুদ্ধ, নিরাপদ পানি পান করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। ইফতারের পর থেকে সাহরির আগ পর্যন্ত ৩০/৪০ মিনিট পরপর এক থেকে দেড় লিটার পরিমাণ পানি পান করা উচিত। তারাবিহ নামাজের সময় বোতলে পানি রেখে নামাজের আগে ও পরে পান করে মোট পানি পানের পরিমাণ পূর্ণ করা সম্ভব।

রোজা রাখলে শরীর হাইড্রেটেড রাখার জন্য, ত্বক বিবর্ণ বা মলিন না হয়, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা না হওয়া এবং গ্যাসের সমস্যা যেন সৃষ্টি না হয়- এজন্য যথেষ্ট পানি পান নিশ্চিত করতে হবে। পানি ছাড়া তরল জাতীয় অন্যান্য পানীয় পান করতে পারেন। এসবের মধ্যে ডাবের পানি, লেবুর শরবত ও মৌসুমি বিভিন্ন ফলের রস পানে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়া যায়।

কেউ চাইলে দুধও পান করতে পারেন। এতে প্রোটিন ও ফ্যাট রয়েছে। একইসঙ্গে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামসহ অন্যান্য খনিজ লবণের উৎস হিসেবে কাজ করে দুধ। পাশাপাশি সচেতনতার জন্য কোল্ড বা এনার্জি ড্রিংকস, রঙিন পানীয় এবং চা ও কফির মতো পানীয় এড়িয়ে চলা হবে ভালো কাজ। এসব পানীয় পানি শূন্যতার ঘাটতি মেটায় না, বরং শরীরের আরও ক্ষতি করে।

শিশু বা অল্প বয়সী ও বয়স্ক ব্যক্তিরা রোজা রাখলে তাদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ইফতার ও সেহরিতে যথেষ্ট পানি পানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে তাদের। এছাড়া অতিরিক্ত গরমে বা রান্নাঘরে, শারীরিক পরিশ্রমের ক্ষেত্রে প্রতি এক ঘণ্টা থেকে দুই ঘণ্টা পরপর ১০-১৫ মিনিটের জন্য ছায়ায় বিশ্রাম নেয়া উচিত। সেহরিতে কিছু না খেয়ে রোজা রাখার অভ্যাস থাকলে সেহরিতে অন্তত পানি বা তরলজাতীয় কিছু অবশ্যই খাওয়া উচিত। এতে পানিশূন্যতার আশঙ্কা থাকবে না।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম