খুলনার নদ–নদী থেকে এক বছরে ৫০ লাশ উদ্ধার

ডেস্ক রিপোর্ট :

খুলনার পাইকগাছা উপজেলার শিবসা নদীর চর থেকে গত শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ইকরাম হোসেন (৪৩) নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। এর এক দিন আগে বৃহস্পতিবার সকালে একই উপজেলার জিরবুনিয়া খাল থেকে ভাসমান অবস্থায় রানা খলিফা নামে আরেক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়।

খুলনার বিভিন্ন নদ–নদী থেকে গত ১ বছরে এমন ৫০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ তথ্য নৌ পুলিশের। এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ মানবাধিকার ব্যুরোর কয়রা উপজেলা সভাপতি তরিকুল ইসলাম বলেন, নদী থেকে লাশ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য উদ্‌ঘাটন ও অপরাধী শনাক্তকরণে দীর্ঘসূত্রতার কারণে অপরাধ বেড়েই চলেছে। তার মতে প্রতিটি ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে এ প্রবণতা কমে আসবে।

পরিসংখ্যান কি বলছে :

নৌ পুলিশের সামগ্রিক পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত ১ বছরে খুলনা অঞ্চলের নদ-নদী থেকে মোট ৫০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩২ জন পুরুষ, ৭ জন নারী ও ১১টি শিশু। উদ্ধার হওয়া লাশের মধ্যে ২০ জনের পরিচয় অশনাক্ত থেকে গেছে।এর মধ্যে নৌ পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত খুলনা অঞ্চলের নদ-নদী থেকে উদ্ধার হয়েছে ৩০টির বেশি লাশ। জানুয়ারিতে ১টি, ফেব্রুয়ারিতে ২টি, মার্চে ৪টি, এপ্রিলে ৩টি, মে ও জুনে ৬টি করে ১২টি, জুলাইয়ে ৩টি এবং আগস্টে ৮টি লাশ উদ্ধার হয়। এর মধ্যে ১৩টি লাশের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

নদীভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, রূপসা নদী থেকে উদ্ধার হয়েছে মোট লাশের ৪০ শতাংশ, ভৈরব নদ থেকে ৩০ শতাংশ, পশুর নদ থেকে ২০ শতাংশ এবং বাকি ১০ শতাংশ উদ্ধার হয়েছে অন্যান্য নদ–নদী থেকে।

নৌ পুলিশসুপার মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, নদ-নদীতে লাশ ফেলা অপরাধীদের কাছে নিরাপদ কৌশল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। স্থলভাগে লাশ ফেলার তুলনায় নদীতে ফেললে হত্যাকারীদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে যায়। পানিতে দীর্ঘ সময় থাকার কারণে লাশ বিকৃত হয়, জলজ প্রাণী দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ফিঙ্গারপ্রিন্টসহ অন্যান্য পরিচয় শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তখন পরিচয় জানা সম্ভব হয় কেবল ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে, যা সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। পরিচয় পাওয়া গেলে স্বজনেরা মামলা করেন আর অচেনা লাশের ক্ষেত্রে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। অশনাক্ত লাশগুলো আঞ্জুমানে মফিদুলের মাধ্যমে দাফন করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে নদী থেকে লাশ উদ্ধারের সংখ্যা বেড়েছে এবং অধিকাংশই হত্যাকাণ্ডের শিকার বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

নদীতে গাছের গুড়ি ভাসতে দেখলেও মনে হয় লাশ ভাসে:

কয়রার বাগালী গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, মে মাসে আমাগের বাড়ির পাশের নদীর চরে এক বুড়া মানুষের লাশ পাওয়া গেছিল। চরে লোহার শিকলে বান্দা ছিল মানুষটা। আবার জুনে কাছারিবাড়ি বাজারের পাশের পুকুরির মধ্যি এক মেয়ের লাশ ভাইসে উঠল। তার আগে বাগালীতেই নদীর চর থিকে আরেক অচেনা মেয়ের লাশ পেয়েছিল পুলিশ। তখন থিকেই নদীতে নামতি বড্ড ভয় লাগে। মাছ ধরতি গেলিও মনডা কেমন করে। নদীতে কোনো গাছের গুড়ি ভাসতি দেখলিও মনে হয়, লাশ ভাসতিছে।’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) খুলনা জেলা সাধারণ সম্পাদক কুদরত-ই-খুদা বলেন, পুলিশ এখন মূলত রুটিন কাজেই সীমাবদ্ধ। অপরাধীদের শনাক্ত করে বিচারের মুখোমুখি করার ক্ষেত্রে তাদের তৎপরতা খুবই কম।

ব্লাকমেইল কারি সাংবাদিক মিজানুর রহমান জনি গ্রেপ্তার

 

স্বপ্ন আলী, মেহেরপুর।

চাঁদাবাজি ও প্রতারনার মামলায় এশিয়ান টিভির মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান জনিকে গ্রেফতার করেছে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ। শুক্রবার সন্ধায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের সহায়তায় মেহেরপুর সদর থানা পুলিশের একটি টিম তাকে গ্রেফতার করে।তাকে এনটিভির সাংবাদিকের ক্যামেরা ছিনতাই এবং চাঁদাবাজি মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, এনটিভির সাংবাদিক রেজানুল বাসার তাপসের দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ২২ নভেম্বর মেহেরপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে মামলা দায়ের করেন বাদি রেজানুল বাসার তাপস।আদালতের বিঞ্জ বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে মেহেরপুর সদর থানাকে এফ আই আরের নির্দেশ দেন।

মামলার এজহারে বাদির অভিযোগ। আসামি অত্যান্ত দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী , মাদক সেবন ও মাদক বিক্রেতাদের বস, মেহেরপুর জেলায় বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজী সহ অসহায় নারীদের দিয়ে দেহ ব্যাবসা করানোর গুরুত্ব অভিযোগ এই মিজানুর রহমান জনির বিরুদ্ধে এখন সূর্যের আলোর ন্যায় প্রতিয়মান। বাদি ১১ বছর যাবত এনটিভির জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। সেই সুবাদে বিবাদির সাথে আমার পরিচয় হয়।গত ১/১১/ ২০২১ তারিখে আসামি মেহেরপুর কমিউনিটি সেন্টারের পাশে কফির দোকানে বসিয়া আমাকে বলে আমার পরিবারে ছবি উঠানোর জন্য এনটিভির জন্য ব্যাবহারিত ডিএসএলআর ক্যামেরাটি কয়েকদিনের জন্য নেই। যার মূল্য ১ লক্ষ টাকা। কিন্ত বিবাদি মিজানুর রহমান জনি ক্যামেরাটি কিছু দিনের জন্য নিলেও আর ফেরত না দিয়ে দিনের পর দিন ঘুরায়তে থাকে। এক পর্যায়ে আসামি ৫০ হাজার টাকা চাঁদার বীপরিতে ক্যামেরা ফেরত দিতে রাজি হয়।বাদি নিরুপায় হয়ে আসামিকে বিকাশ নগতের মাধ্যমে ৪৭ হাজার টাকা দেই।তারপরেও আসামি ক্যামেরা ফেরত না দিয়ে আজকাল করে ঘুরাইতে থাকে। বিষয়টি বিভিন্ন জনকে জানালে আসামি আরো ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। তানা হলে বাদির ছবি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করবে বলে হুমকি প্রদান করে।এছাড়া আসামি বিভিন্ন সময় বাদিকে ভয়ভীতি এবং প্রান নাশের হুমকি প্রদান করে। আসামি বিভিন্ন সময় সাংবাদিকের পরিচয় দিয়ে মানুষকে ভয়ভিতি এবং চাঁদা দাবি করে। আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চাঁদাবাজি মামলা চলমান। কথায় কথায় হুংকার আর মার কাট দাঙ্গা বাঁধানো যেনো তার নিত্যদিনের সঙ্গী। সুস্থ সাংবাদিক মহলকে কলঙ্কিত করেছে এই মিজানুর রহমান জনি।

এছাড়া সম্প্রতি হোটেল আটলান্টিকা ব্লাকমেইল চাঁর সাংবাদিকের মধ্যে মিজানুর রহমান জনি অন্যতম। ওই মামলায় আসামি প্রিয়া খান এবং ছন্দা পৃথক জবানবন্দিতে মিজানুর রহমান জনিকে অভিযুক্ত করেছে। অভিযুক্ত হওয়ার পর থেকে মিজানুর রহমান জনি পালাতক ছিলেন।
মিজানুর রহমান জনির গ্রেফতার বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হ‌ওয়ার পর থেকে মেহেরপুর বিভিন্ন মহলে একধরণে প্রশান্তি ও মিষ্টি মুখ করছে বলে তথ্য পাওয়া যায়।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম