ময়মনসিংহ ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দুর্নীতির আখড়া তবুও ১১ তম স্থানে

স্টাফ রিপোর্টার:

প্রবাদ আছে চোরে শোনেনা ধর্মের কাহিনী, ময়মনসিংহ ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দুর্নীতির আখড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে তবুও ১১ তম স্থানে কি করে হলো এ যেন দেখার কেউ নেই। ডাক্তার বাবুরা কি করে এসব করে থাকে। উকিল বাবুদের মত আসামি ধরেছে পুলিশ উকিল বাবু জামিনের কাগজ নিয়ে হাজির, কি করে এসব করে বাবুরা। বর্তমানে একটি কথা প্রচলিত আছে যদি করেন দুর্নীতি হতে পারেন পদোন্নতি। দুর্নীতি যদি না করেন বদলি খাতায় নাম লেখাতে পারেন । কিছু অসাধু ডাক্তারদের কারণে পুরো ডাক্তার জাতির কলঙ্ক।

ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর দুর্নীতির বিষয় কয়েকজন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে যোগাযোগ করলে । নাম না বলা সত্বে তারা জানিয়েছে এই পুরো হাসপাতালটি প্রতিটা সেক্টরে দুর্নীতির মহোৎসব চলছে.তারা আরো জানিয়েছে এত দুর্নীতি হওয়ার পর কি করে ১১ তম স্থান হতে পারে। রোগীরা বারবার অভিযোগ করার পরেও কোন নিয়মে আসেনি বলে রোগীরা জানিয়েছে।

এই উপজিলা এ ১৫০ টা নরমাল ডেলিভারি হয় না , সর্বোচ্চ ৩০_৪০ টা হচ্ছে সেখানে প্রতিদিন ৫ টি করে ভূয়া ডেলিভারী রোগী ভর্তি দেখানাে হচ্ছে। ১ মাসে প্রায় ১৫০টি নরমাল ডেলিভারীর ভুয়া রুগী দেখানো হচ্ছে যাদের কোনো অস্তিত্ব নেই,।
এই বাজেট এর টাকাগুলো সব ( UH&FPO, ) ডাক্তার জয় সরকার, ডাক্তার মাসুদ পারভেজ এবং সিস্টার, সুপারভাইজার এই ৪ জন ব্যক্তি ভাগাভাগি করে নেয়। এই ভালুকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কোন কোন বিষয় দুর্নীতি করে ১১ তম স্থানে এসেছে সে বিষয়ে জানা খুব জরুরী।

# ল্যাবে প্রতিদিন ২০০ শত টেস্ট এর রোগী হয়, কিন্তু সেই পরিমাণ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয় না।
# আলট্রাসনােগ্রাফী প্রতিদিন ৪০ টার উপরে হয়, কিন্তু সরকারি কোষাগারে টাকা জমা হয় না। যারা
আলটাসনোেগ্রাফী করতো (মেডিকেল অফিসার), তাদের টাকা দেওয়া হয় না । USG এ ফিল্ম দেওয়া হয় না।
# Xray প্রতিদিন ৭০/৮০ টি হয়, এতেও সরকারি কোষাগারে টাকা কম জমা হয়। প্রতি ফিল্ম থেকে UHFPO ১৫ টাকা বেশি নেয়.।
ডাঃ জয় সরকার আল্ট্রা করে থাকে, কিম্তু তার কোন প্রশিক্ষণ ও অনুমতি নেই।
বিধান না থাকলেও নার্সরা টাকার বিনিময়ে MR, D and C করে থাকে।
# হাসপাতালের বহিরবিভাগের ডাক্তারা বাহিরের ওযুধ বেশি লিখে থাকে। সরকারি বরাদ্দের টাকা সঠিক খ্যাতে খরচ না করেই ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে নেয় Uhfpo।
# অন্তঃ বিভাগে রােগীদের সকল ওষুধ পাওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয় না।
ডাক্তার জয় সরকার এবং ডাক্তার মাসুদ পারভেজ এর প্ররোচনায় হাসপাতাল অনিয়ম ও দুর্নীতি করে জনগন সেবা থেকে বঞ্চিত।
# বহিঃবিভাগে সময় মত কিছু ডাক্তার উপস্থিত থাকে না। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রতিদিন আসার কথা
বিভিন্ন ধরনের বেনিফিট নিয়ে হাসপাতালের সাপ্লাইকৃত ওষুধ শর্ট দেখিয়ে তাদের বেনিফিট নেয়।
থাকলেও সপ্তাহে ০৩ দিনের বেশি কেউই উপস্থিত থাকে না।
# বহির্বিভাগে শিশু বিভাগে নার্স দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়,। এই UH&FPO আসার পর থেকে ডাঃ জয় সরকার এর প্ররোচনায।
স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসা রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়।
ইউনিয়ন পর্যায় মেডিকেল অফিসার পদায়ন থাকলেও সেখানে কোনো মেডিকেল অফিসার কাজ করেন না।

# সব ফার্মেসীকে টাকা কালেকশন এ বসানো হয়েছে, যার ফলে রোেগীদের ওষুধ ঠিক মত দেওয়ার লোক পাওয়া যায় না। সর্বপুরি হাসপাতালের গ্রুপিং করে সেবার মান নেই বললেই চলে । ইমারজেন্সী ভর্তির টিকেট নেই, ইমারজেন্সী বহি টিকিট দরিদ্র তহবিল থেকে করা হয়।

# জনৈক নার্স এর সাথে UH&FPO এর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। এই নার্স হাসপাতালে যা
বলে, তাই হয়। ডিউটিতে ঠিক মত থাকে না, রােগীদের সাথে চরম দূরব্যবহার করে।
( রাজ্জাক সাহেবের ) চাকুরী ০২ নভেম্বর/ ২০২২ইং এ শেষ, হয়ে কিন্তু তারপরও তিনি হাসপাতালে কর্মরত রয়েছে।
uhfpo সকল দুর্নীতি এর ডান অ্যান্ড বাম হাত ডাক্তার জয় সরকার অ্যান্ড ডাক্তার মাসুদ পারভেজ।

# ডাঃ জয় সরকার ট্রমা সেন্টারের ডিউটি টাইমে তার নিজ ল্যাবর প্যাড়ে নির্দেশকা দেয় এবং রোগীদের বিভন্ন হাসপাতালর তার নিজস্ব চেম্বারে যাওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করে থাকে। সব ডাক্তারদের ডিউটি রাষ্টার পরিবর্তন হলেও ডাঃ জয় এবং ডাঃ মাসুদ এর ডিউটি (রাষ্টার) পরিবর্তন হয় না এভাবে অন্যান্য ডাক্তার দের কুক্ষিগত করা হয়েছে l
# ১ ঘন্টার উপরে বহিঃ বিভাগ বন্ধ রাখা হয়
মাঝে মাঝে আউট ডোর বন্ধ রেখে রোগীদের ভােগান্তিতে রেখে কেক কাটা অনুষ্ঠান করা হয়।
# অনেক ডাক্তারদের রোগের সাথে ওষুধের কোন মিল থাকে না। সঠিক ডাোজ এ ওষুধ দেওযা হয় না
এ ব্যাপারে রোগীদের অনেক অভিযােগ রয়েছে। ডাঃ জয় সরকার RMO হওয়ার আগ পর্যন্ত হাসপাতালে এত অবাবস্থাপনা ছিল না।
রোগী ভরতি হওয়ার পর সব ওযুধ হাসপাতাল থেকে পাওয়া যাইতো, । আর এখন ওষুধ তো দূরের কথা সেলাইন সেট ও হাপাতাল এ
পাওয়া যায় না। সব বাহিরের ফার্মিসী থেকে রোগীদের ক্রয় করতে হচ্ছে। রাত ১২ টায় সকল ফার্মেসি বন্ধ হয়ে যায়, তখন রোেগীদের ভােগান্তির কোন শেষ থাকে না । ওষুধের জন্য রোগীদের ময়মনসিংহ যেতে হয়। অনেক সময় রোগী মারাও যায়।

ডা: জয় সরকার এবং ডা: মাসুদ পারভেজ এর বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড ফাঁস হবার পর তারা নামমাত্র RMO অ্যান্ড modc পোস্ট হতে পদত্যাগ এর কথা বলেন এবং তাদের মনোনীত প্রার্থী Dr Taslima কে নাচের পুতুল বানিয়ে RMO পদ দেওয়া হলেও পরোক্ষভাবে ডা: জয় সরকার এবং ডা: মাসুদ পারভেজ তাদের অনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

# ইমারজেন্সী ডিউটি ডাক্তারের সকাল ও রাতের খাবার ওমুধ কোম্পানী দিয়ে থাকে। প্রতি সপ্তাহে ২ দিন। এক এক কোম্পানীর সিটি গার্ড়েনে নিয়ে দুপুরের খাবার খাওয়ায়। এসব ব্যবস্থা করে RMO ( ডাক্তার জয় সরকার R MODC (ডাক্তার মাসুদ পারভেজ। রোগীরা অভিযোগ করলে উপরের লেভেলের কর্মকর্তারা এসে ভোট মিটিং এ বসে সমাধান না করে বড় অংকের খাম নিয়ে চলে যায়। যে কারণে এই হাসপাতালটি সাধারণ রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাহলে ভাবা যেতে পারে এতকিছু করেও কি করে ১১ তম স্থানে আসতে পারে। এই ভালুকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে বিস্তারিত আসছে পরবর্তী সংখ্যায়।

ডিবি হারুনের শতকোটি টাকার ‘ রিসোর্ট’

স্টাফ রিপোর্টার:

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। পুলিশের এক আলোচিত-সমালোচিত চরিত্র। ২০তম বিসিএসের মাধ্যমে ২০০০ সালে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পুলিশ বিভাগে চাকরি নেন। কিন্তু তার বাবা মো. হাসিদ ভূঁইয়া মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। ১৯৯৬ সালের ১২ই জুনের নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জাতীয় সংসদের তৎকালীন ডেপুটি স্পিকার মো. আবদুল হামিদের প্রভাবে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় জায়গা পান তিনি। ডিএমপি’র সাবেক ডিবি প্রধান হারুন তার গ্রামের বাড়িতে শত কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তুলেছেন প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট নামে অত্যাধুনিক ও বিলাসবহুল একটি প্রমোদাগার। মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে ৪০ একরেরও বেশি জায়গা নিয়ে রিসোর্টটি তৈরি করা হয়েছে। রিসোর্টটির প্রিমিয়াম স্যুটের প্রতিদিনের ভাড়া ২০ হাজার টাকা। সর্বনিম্ন ডিলাক্স রুমের ভাড়া প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা।

   এ ছাড়া সুপার ডিলাক্স রুমের ভাড়া ১২ হাজার টাকা। ২০২১ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর রিসোর্টটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। রিসোর্টের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং রিসোর্ট উদ্বোধন উভয় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের ছেলে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক।
প্রেসিডেন্ট রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তার ছোট ভাই ডা. শাহরিয়ার। রিসোর্টটিতে হারুনের পরিবারের ৫ থেকে ৭ একর জায়গা রয়েছে। বাকি অন্তত ৩৫ একর জায়গা ছিল অন্যদের। এসব জায়গার মালিকদের দাম দেয়ার কথা বলে হারুন রিসোর্টের জন্য জায়গা দখলে নেন। জায়গার মালিকদের মধ্যে হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষজন রয়েছেন। এসব জায়গার জন্য কেউই পুরো দাম পাননি। কেউ ১০ লাখের মধ্যে এক লাখ, কেউ ২০ লাখের মধ্যে ২ লাখ এমন হারে টাকা পেয়েছেন।

জায়গার দাম না পাওয়ায় এখনো অন্তত ১০ থেকে ১২ জন তাদের জমি রেজিস্ট্রি করে দেননি। তাদেরই একজন মিঠামইন সদর ইউনিয়নের গিরীশপুর গ্রামের দিলীপ বণিক। তিনি জানান, হারুন রিসোর্ট করার কথা বলে তার এক একর ১০ শতাংশ জায়গা নিয়েছেন। জমির কোনো দরদামও নির্ধারণ করা হয়নি। তাকে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। অথচ জমির দাম হবে অন্তত ২০ লাখ টাকা। টাকা না পাওয়ায় জমি রেজিস্ট্রি করে দেননি জানিয়ে দিলীপ বণিক বলেন, আমার মতো এমন অন্তত ১২ জন রয়েছেন, যাদের নামমাত্র টাকা দিয়ে জমি রিসোর্ট করার জন্য হারুন নিয়ে গেছে। আমরা জমির দলিল দেইনি। রিসোর্টের জন্য নেয়া ১২ আনার মতো জায়গার দলিল হয়েছে, বাকি জমির দলিল হয়নি। পরিবর্তিত পরিস্থিতি প্রসঙ্গে দিলীপ বণিক বলেন, আমার জমির কাগজ ও দলিল রয়েছে। যেহেতু জমি বিক্রি করিনি তাই আমিই জমির মালিক।

এলাকাবাসী বলছেন, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন সাবেক প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের আশীর্বাদ এবং সহযোগিতায় চাকরি পাওয়া থেকে শুরু করে পুলিশের বিভিন্ন উচ্চ পদে আসীন হতে পেরেছেন। মো. আবদুল হামিদ সে সময় প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় তাকে খুশি করতে দাপুটে পুলিশ অফিসার হারুন তার রিসোর্টের নাম দিয়েছেন ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’। ফলে নিজেদের তেমন উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জায়গা না থাকলেও রিসোর্টের জন্য জায়গা নিতে বেগ পেতে হয়নি। রিসোর্টটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময় সেখানে মাত্র একটি পুকুর ছিল। এখন চারপাশে গাছপালা, ডুপ্লেক্স কটেজ, কালচারাল সেন্টার, আউটডোরসহ নানা কারুকার্য সম্বলিত পাথরের বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করা হয়েছে।

রয়েছে একটি চাইনিজ রেস্তরাঁ, শিশুপার্ক, ওয়াচ টাওয়ার, লেকসহ নানা কিছু। সাবেক প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদসহ আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের মন্ত্রী-এমপি, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিচার বিভাগের কর্মকর্তা, চলচ্চিত্র জগতের তারকা এবং ভিআইপি ব্যক্তিরা বিলাসবহুল রিসোর্টটিতে সময় কাটিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে রিসোর্টটিতে দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে রিসোর্টে বুকিং চালু রয়েছে।

এদিকে ২০১১ সালের ৬ই জুলাই সংসদ ভবনের সামনে তৎকালীন বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুককে পিটিয়ে দেশ জুড়ে আলোচিত হন তৎকালীন ডিএমপির তেজগাঁও জোনের ডিসি (অতিরিক্ত উপ-কমিশনার) হারুন অর রশীদ। এ ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থা কুড়ান আলোচিত এই পুলিশ কর্মকর্তা। ২০১৪ সালের ২৪শে আগস্ট তিনি গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পান। এর মাত্র চার মাস পর ২০১৪ সালের ২৬শে ডিসেম্বর গাজীপুরে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জনসভায় ১৪৪

ধারা জারি এবং নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও দমন-পীড়নের মাধ্যমে ওই জনসভা ভণ্ডুল করে দেন এসপি হারুন। এ ঘটনায় নতুন করে আবারো আলোচিত হন হারুন। টানা ৪ বছর গাজীপুর জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় তার বিরুদ্ধে ছিল অভিযোগের পাহাড়। ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদের জিম্মি করে টাকা আদায়, জমি দখলে সহায়তা ও মদত দেয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ সেখানকার মানুষের মুখে মুখে। তার ক্ষমতার দাপটে কোণঠাসা ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও। সেখানে দায়িত্ব পালনকালে ২০১৬ সালে গাজীপুর সদর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়ায় ইউপি নির্বাচনে নগ্নভাবে হস্তক্ষেপ করেন এসপি হারুন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০১৬ সালের ২১শে এপ্রিল এসপি হারুন অর রশীদকে গাজীপুর থেকে প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর দোর্দণ্ড প্রতাপশালী এই পুলিশ কর্মকর্তার প্রত্যাহারের আদেশ তুলে নিয়ে স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয় মাত্র ১১ দিনের ব্যবধানে ৩রা মে গাজীপুরের এসপি পদে পুনর্বহাল করে

এরপর ২০১৮ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর শুরু হয় এসপি হারুনের নারায়ণগঞ্জ অধ্যায়।

২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর সীমাহীন অত্যাচার-নির্যাতন ও দমন-পীড়নের মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন এই হারুন। অপহরণ, গুম, চাঁদাবাজির মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন জেলার দণ্ডমুণ্ডের কর্তা। সে সময় শামীম ওসমানের সঙ্গে দ্বন্দ্বসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে আলোচিত হন এই পুলিশ কর্মকর্তা। চাঁদার জন্য তিনি একাধিক শিল্পপতিকে তুলে নিয়ে সাজানো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর ভয় দেখাতেন। এর ধারাবাহিকতায় চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় আম্বার গ্রুপের চেয়ারম্যান শওকত আজিজ রাসেলের স্ত্রী-সন্তানকে রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে এসপি হারুন একদল পুলিশ নিয়ে নারায়ণগঞ্জে তুলে নিয়ে যান। পরে তারা মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান। এ ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হলে ২০১৯ সালের ১০ই নভেম্বর এসপি হারুনকে নারায়ণগঞ্জ থেকে সরিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে (ট্রেনিং রিজার্ভ) সংযুক্ত করা হয়।

কিন্তু তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের আশীর্বাদে এসপি হারুনকে ২০২০ সালের ৯ই জুন ডিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) হিসেবে তেজগাঁও বিভাগের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। এরপর ২০২১ সালের ২রা মে তাকে অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি দিয়ে ১১ই মে ডিএমপি’র যুগ্ম কমিশনার করা হয়। এরপর ২০২২ সালের ১২ই জুন হারুনকে ডিএমপি’র ডিবি প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। ডিবি প্রধান হিসেবে বিএনপি’র নয়াপল্টন অফিসে নানা নাটক মঞ্চস্থ করে বিএনপি নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার ও দমন-পীড়নে নেতৃত্ব দেন হারুন। হেফাজতে ইসলামের অনেক নেতা তার দ্বারা নিগ্রহের শিকার হন। ডিবি অফিসে নিয়ে মধ্যাহ্নভোজ এবং সেসবের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার মাধ্যমে তিনি ডিবি প্রধানের কার্যালয়কে পরিচিত করান ‘ভাতের হোটেল’ হিসেবে। সর্বশেষ কোটা আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ককে নিরাপত্তা হেফাজতের নামে আটকে রেখে ভিডিও স্টেটমেন্ট নিয়ে দেশে-বিদেশে আলোচিত ও সমালোচিত হন। এরপর গত ৩১শে জুলাই তাকে ডিবি থেকে সরিয়ে ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) এর দায়িত্ব দেয়া হয়।

শেখ হাসিনার পতনের পর হারুনের অপকর্মের বিষয়গুলো এখন মানুষের মুখে মুখে।
কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে এক দরিদ্র কৃষক পরিবারে হারুন-অর-রশীদের জন্ম। তার পিতার নাম আব্দুল হাসিদ ভূঞা। চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় হারুন। দ্বিতীয় জিয়াউর রহমান মাদকদ্রব্যের এসআই ও তৃতীয় জিল্লুর রহমান পুলিশের ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এ ছাড়া হারুনের প্রতিষ্ঠিত বিলাসবহুল ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’ এর এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সবার ছোট ভাই শাহরিয়ার। হারুন কিশোরগঞ্জের আজিমউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং গুরুদয়াল সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাসের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সূর্যসেন হলের ২১৩নং রুমে থাকার সময়ে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতিতে তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।

সাবেক প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ এডভোকেটের স্নেহভাজন হওয়ার কারণে সে সময় তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে কার্গো ভিলেজের অগ্নিকাণ্ডে অত্যন্ত হতাশাজনক : মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক দের মাঝে যে অনৈক্য কুমিরের দেখা মিলল রাজশাহীর পদ্মায় সরকার ও সেনাবাহিনী, গণতন্ত্রে উত্তরণ ও ন্যায়বিচার যেন ব্যাহত না হয় আজ থেকে আমরণ অনশন, প্রত্যাখ্যান শিক্ষকদের শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান