টঙ্গীতে মহাসড়ক দখল করে চাঁদাবাজি এ যেনো দেখার কেউ নেই

মোঃ ইব্রাহিম হোসেন:

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন টঙ্গী পূর্ব থানার ৫৭নং ওয়ার্ডের টঙ্গী বাজার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দখল করে চাঁদাবাজি টঙ্গী বাজার বাস স্ট্যান্ডে থেকে শুরু করে আব্দুল্লাহপুর ব্রীজ পর্যন্ত চাঁদাবাজদের দখলে। রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙ্গিয়ে এই সব চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের দোকান বসিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।

অনুসন্ধানে দেখা যায় সুলতান মার্কেটের সামনে ও মিতালী পাম্পের সামনে থেকে সিএমবির জায়গা থেকে শুরু করে আব্দুল্লাহপুর ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় ৩/৪ শত বিভিন্ন ধরনের দোকান পাঠ বসিয়ে প্রতি দোকান থেকে ২৫০/৩৫০শত টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক দোকান মালিক সাথে কথা হলে তারা জানায়, টঙ্গী বাজার হকার্স সমবায় সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী ওরফে বস্তা আলী, সাধারণ সম্পাদক মোঃ শামীম আহমেদ ওরফে বেগ শামীম এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ কবির হোসেন ওরফে বাট্টু কবির এই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দখল করে প্রতিদিন ফুটপাতের দোকান থেকে প্রতিদিন চাঁদা আদায় করে যাচ্ছে।

আরো জানা যায়,প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে চালিয়ে যাচ্ছে ফুটপাতে চাঁদাবাজি। দোকান মালিকরা আরও জানায় স্থানীয় কাউন্সিল এর নাম ভাঙ্গিয়ে তারা মহাসড়ক দখল করে বিভিন্ন ধরনের ভ্যান যোগে ও চৌকি বসিয়ে বাচ্চাদের পোশাক,লুঙ্গির দোকান, পুরাতন কাপড়ের দোকান,প্যার্ন্টের দোকান, মহিলাদের পোষাক,ফলের দোকান, সবজির সহ প্রতিদিন চাঁদা আদায় করে যাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।

এই বিষয়ে টঙ্গী বাজার হকার্স সমবায় সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সাথে দেখার করার কোন সুযোগ হয়নি এবং মুঠোফোনে একাধিক যোগাযোগ করার চিষ্টা করলেও করার যায়নি।

এই বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন এর অপরাধ দক্ষিণ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার ইব্রাহিম খানের সাথে একাধিক বার মুঠোফোনে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ তিতাস গ্যাস অফিসের নৈশপ্রহরী কোটি কোটি টাকার মালিক !

স্টাফ রিপোর্টারঃ

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদি ওয়ার্কশপের মোড় এলাকার বাসিন্দা মনির হোসেন ওরফে গ্যাস মনির তিতাসের নিরাপত্তাকর্মী পদে চাকরি করেন। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন তিনি। এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ, চুলা প্রতি গ্যাসের টাকা অবৈধভাবে উত্তোলন আর গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মনির হোসেন অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তার নামের প্রভাব এতটাই যে তাকে পুরো এলাকাজুড়ে গ্যাস মনির নামে চেনেন এলাকার বাসিন্দারা।
মনির হোসেন ওরফে গ্যাস মনির তিতাস অফিসের নিরাপত্তাকর্মী অথবা নৈশপ্রহরী হলেও এলাকায় তিনি বিশিষ্ট শিল্পপতি হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন। স্থানীয়রা বলছেন, মনির হোসেন ওরফে গ্যাস মনির তার নিজ এলাকা পাইনাদিসহ আশপাশের এলাকা হীরাঝিল, মিজমিজি, তেরা মার্কেট, কান্দাপাড়াসহ আশপাশে তিনিই গ্যাসের অবৈধ সংযোগ দিয়ে থাকেন এবং তিতাস অফিসের সঙ্গে যোগসাজশে লাইন বিচ্ছিন্ন করে থাকেন।
মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে তিনি মালিক হয়েছেন বহুতল ভবনের। পাইনাদি ওয়ার্কশপের মোড় এলাকায় চারকাঠা জমির ওপর নির্মিত তার বহুতল ভবনটির আনুমানিক মূল্য পাঁচ কোটি টাকা। তিন কাঠা জমিসহ কয়েকটি দোকানও আছে তার। যার আনুমানিক মূল্য দুই কোটি টাকা। এলাকায় ও গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের মতলবে নামে-বেনামে জমিজমা কিনেছেন। হয়েছেন কোটি কোটি টাকার মালিক।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, তিতাস গ্যাস অফিসের নিরাপত্তাকর্মীদের ইনচার্জ মনির হোসেন নারায়ণগঞ্জ তিতাস গ্যাস অ্যান্ড ট্রান্সমিশনে ছয় বছর চাকরি করেছেন। সেই সময়ে তিনি সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদি এলাকার গ্যাসের সব সংযোগ দিয়েছেন এবং অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে আবার পুনরায় চালু করেছেন। পরবর্তী সময়ে তিতাসের সোনারগাঁও কার্যালয়ে এসেও তিনি আবার শুরু করেন অবৈধভাবে আয়। বহু বাড়িতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ ও বিচ্ছিন্নের নামে টাকা কামিয়েছেন গ্যাস মনির। এ ছাড়া অবৈধ সংযোগ রয়েছে এমন বাসা থেকে মাসিক হারে গ্যাসের বিল উত্তোলন করেছেন। সেই সুবাধে তিনি কাড়ি কাড়ি টাকার মালিক হয়েছেন। অন্যদিকে, পাইনাদী এলাকায় অবৈধ গ্যাস ও গ্যাস সংযোগের নামেও তিনি প্রচুর টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন চুনাভাট্টির মালিকদের কাছ থেকে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বর্তমান নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ তিতাস অফিসে কর্মরত নিরাপত্তাকর্মীদের দলপতি মনির হোসেন বিভিন্ন সময়ে নানা কলাকৌশলে গ্যাস সংযোগের নামে ও আবাসিকে গ্যাস সংযোগের নামে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করেছেন।
আব্দুল করিম নামে পাইনাদি ওয়ার্কশপের মোড় এলাকার এক চা দোকানি  বলেন, ‘এখন আর সে গ্যাস মনির হোসেন নাই, বহু সম্পদের মালিক। এলাকায় বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন। গাড়ি হাঁকিয়ে চলাফেরা করেন। অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন। ’
হাসিবুল খন্দকার জানান, কয়েক বছরের ব্যবধানে গ্যাসের সঙ্গে লেনদেন করে মনির হোসেন এখন কোটি টাকা মালিক বনে গেছেন। এলাকায় তিনি কোটিপতি দানবীর হিসেবে চলাফেরা করেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, বৈধ সংযোগের কথা বলে মনির হোসেন যে সংযোগ দিয়েছেন তা এখনো অবৈধই রয়ে গেছে। সরকার আবাসিকে তিতাস গ্যাসের বৈধ লাইন বন্ধ ঘোষণার পর যত সংযোগ মনির হোসেন এলাকায় দিয়েছেন, তা সবই অবৈধ হিসেবে রয়েছে। মনির হোসেন তিতাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে গোপনে আঁতাত করে এই সংযোগগুলো বৈধ করে রেখেছেন এবং সংযোগগুলো থেকে প্রতি চুলায় এক হাজার টাকা করে তোলেন। শুধু তা-ই নয়, অবৈধ সংযোগের কথা বলে বহু বাসিন্দার কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন তার ইচ্ছামতো টাকা।
নিরাপত্তাপ্রহরী হয়ে এত সম্পদের মালিক কিভাবে হলেন জানতে চাইলে মনির হোসেন বলেন, ‘আমি যা কিছু করেছি সৎপথে, সৎ উপার্জনের মাধ্যমে করেছি। অবৈধভাবে কিছুই করিনি। ’
সোনারগাঁ তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশনের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) সুরুজ আলম জানান, তিতাসের কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ লিখিত আকারে পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় তিতাস কর্তৃপক্ষ।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ জানান, অনৈতিকভাবে কেউ যদি অঢেল সম্পদের মালিক হন, সেই বিষয়গুলো তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব-১১-এর অধিনায়ক তানভির মাহমুদ পাশা বলেন, ‘অপরাধী যে-ই হউক না কেন, তাদের কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না। অবৈধভাবে কেউ সম্পদ অর্জন করলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে। ’

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম