নোয়াখালীতে কিডনি ইউনিট বন্ধের ঘোষণায় রোগীদের বিক্ষোভ

নোয়াখালীতে কিডনি ইউনিট বন্ধের ঘোষণায় রোগীদের বিক্ষোভ

নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি:

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট হঠাৎ বন্ধের ঘোষণায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা। সোমবার (৭ জুলাই) সকাল থেকে হাসপাতালের সামনে অক্সিজেন সিলিন্ডার, হুইলচেয়ার ও স্ট্রেচারে করে কয়েকজন রোগী ও স্বজনরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। পরে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি দেন তারা।

বিক্ষুব্ধদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে এখান থেকে স্বল্পমূল্যে ডায়ালাইসিস সেবা পাচ্ছিলেন তারা। ইউনিটটি বন্ধ হয়ে গেলে প্রাইভেট ক্লিনিকে অতিরিক্ত খরচ বহন করা অনেকের পক্ষে সম্ভব হবে না। নিয়মিত ডায়ালাইসিস না করালে অনেক রোগীর জীবন হুমকির মুখে পড়বে।

ডায়ালাইসিস সেন্টারের ইনচার্জ ডা. মামুন পারভেজ জানান, এখানে সরকারিভাবে কোনো বরাদ্দ আসে না। রোগীদের কাছ থেকে সামান্য অর্থ নিয়ে সেবা চালু ছিল। কিন্তু সাবেক ইনচার্জ ডা. শাহিদুল ইসলাম সাকিব বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান চালায়। ফলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আপাতত ইউনিটটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তাসলিমা বেগম নামে এক রোগী বলেন, প্রতি সপ্তাহে দুইবার ডায়ালাইসিস করাতে হয়। মাত্র ৪০০ টাকায় এই হাসপাতাল থেকে সেই সেবা পেতাম। কিন্তু হঠাৎ দুপুর ১২টার মধ্যে হাসপাতাল ছাড়ার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের মতো রোগীদের কোথায় যাব?

রোগীর স্বজন আবদুল মোতালেব ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এখানে ক্যাথেটর আড়াই হাজার টাকায় আর ফিস্টুলা ৬ হাজার টাকায় হয়। বাইরে এর খরচ ১৫-৩০ হাজার টাকা। কিছু প্রাইভেট হাসপাতাল মালিকের চাপে ও ষড়যন্ত্রে এটি বন্ধ করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নার্স জানান, সাবেক ইনচার্জ ডা. শাহিদুল ইসলাম সাকিব রোগী ও নার্সদের সঙ্গে অসদাচরণ করেছেন। এমনকি রোগীদের প্রাইভেট হাসপাতালে যেতে বাধ্য করতেন, মৃত্যুকামনা করতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, ইনচার্জ থাকা অবস্থায় তিনিও রোগীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সেবা চালাতেন। তবে অসদাচরণ ও আচরণগত কারণে তাকে প্রত্যাহার করে ঠাকুরগাঁওয়ে বদলি করা হয়। এরপর থেকেই বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়ে ইউনিট বন্ধের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে ডা. শাহিদুল ইসলাম সাকিব বলেন, আমি এখন এখানে নেই। ঠাকুরগাঁওয়ে বদলি হয়েছি। ডায়ালাইসিস সেন্টারের অনিয়ম তুলে ধরার কারণেই আমাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধনের কোনো যৌক্তিকতা নেই।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ৩ জুলাই দুদকের অভিযানের পর ইউনিটের চিকিৎসক ও কর্মচারীরা সম্মানহানির অভিযোগ করেছেন। এখনই ইউনিট বন্ধ করছি না, তবে সরকারি সহায়তা না পেলে চালিয়ে যাওয়া কঠিন হবে।

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ গনমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি। আপাতত বন্ধ হচ্ছে না। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ থেকে যন্ত্রপাতি সরবরাহের মাধ্যমে এই আধুনিক কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট চালু হয়। এরপর থেকে নোয়াখালী ছাড়াও আশপাশের জেলা থেকে বহু রোগী এখানে স্বল্প খরচে সেবা নিচ্ছেন। জনগণের স্বার্থে ইউনিট চালু রাখার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ বিশৃঙ্খলা করলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জোর পূর্বক ধর্ষণ ও অশ্লীল আপত্তিকর ছবি-ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ায় যুবক গ্রেফতার

 

নিজস্ব প্রতিনিধি:

মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসি(২০), এর সাথে লাভলু আহম্মেদ(২৮) পিতা-ফরিদ আহম্মেদ, সাং-চকপাড়া দক্ষিন নালিতাবাড়ি, থানা-নালিতাবাড়ি, জেলা-শেরপুর এর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচিত হয়। এক পর্যায়ে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক হয় সেই সুবাদে তার সাথে ০৭/৬/২০২৩খ্রিঃ তারিখ ময়মনসিংহ জেলার বিজ্ঞ নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে এ্যফিডেভিট মূলে কোর্ট ম্যারেজ করে বিবাহের পর তারা ময়মনসিংহ চরপাড়া কলনীতে ভাড়া বাসায় ১৪ দিন এক সাথে ছিলো। কিন্তু হঠাৎ উক্ত বিবাদী মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসিকে কোন কিছু না জানিয়ে বাসা থেকে চলে যায়।পরবর্তীতে জানতে পারে যে, বিবাদী তার নিজ গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে তার এরুপ ব্যবহারে বিবাদীর এলাকায় আরো খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারে যে, উক্ত বিবাদীর আরোও একজন স্ত্রী আছে।উক্ত বিবাদী ইতোপূর্বে ভিকটিমের কাছ থেকে বিবাহের পর হতে বিভিন্ন সময়ে কৌশলে আনুমানিক ৪০,০০০/- (চল্লিশ হাজার) টাকা নিয়েছে। কাবিন নামা মূলে বিবাহের কথা বললে বিবাদী ৫,০০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা দাবী করে। কিন্তু ভিকটিমের পরিবারের এত টাকা দেওয়ার সামর্থ্য না থাকায় তার পরিবার উক্ত টাকা দিতে অপারগতা জানায়। এর পর থেকে বিবাদী ভিকটিমকে তার চাহিদা মোতাবেক ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। উক্ত টাকা না দিলে বিবাদী ভিকটিমকে জিম্মি করে তার পরিবারের কাছ থেকে টাকা আদায় করবে এবং আরো হুমকি দেয় যে, ভিকটিম এবং বিবাদী একসাথে থাকাকালীন বিবাদীর মোবাইল ফোনে কৌশলে গোপনে ধারনকৃত ভিকটিমের বিভিন্ন আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেবে। উক্ত বিষয় নিয়ে বিবাদী প্রায়সময়ই ভিকটিমকে ভয়ভীতিসহ বিভিন্ন ধরনের প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। বিবাদী তার দাবীকৃত টাকা না পেয়ে ভাড়া বাসায় থাকাকালীন ভিকটিমের অজান্তে গোপনে ধারনকৃত একান্ত মূর্হুত্বের অশ্লীল ছবি ও ভিডিও উক্ত বিবাদীর তৈরিকৃত ফেক ফেইসবুক আইডি ও টিকটকে ভাইরাল করে দেয় যা ভিকটিম তার নিজ বাড়ী শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ীর কালিনগর গ্রামস্থ অবস্থানকালে ইং ২৫/০৮/২০২৩ তারিখে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে দেখতে পায়। এছাড়াও বিবাদী ভিকটিমের Jannatul Ferdous নামক ফেইসবুক আইডি টি হ্যাক করে। হ্যাককৃত ফেইসবুক আইডির মেসেঞ্জারের মাধ্যমে তার অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ভিকটিমের ছোট ভাই (Mainul Hasan Mobin) নামীয় ফেইসবুক আইডি এর ম্যাসেঞ্জারে প্রেরন করে এবং একাধিক আইডিতে শেয়ারসহ আরোও অনেককে ছবি ও ভিডিও প্রেরন করে। বিবাদীর তৈরীকৃত ফেক আইডিতে ভিকটিমের মোবাইল নাম্বার উল্লেখ্য করে দেয় এবং অশ্লীল কথাবার্তা লিখে পোস্ট করে যার কারনে ভিকটিমকে বিভিন্ন সময় অপরিচিত লোক জন ফোন দিয়ে বিরক্তসহ খারাপ কথা বলে। বিবাদী তার ব্যক্তি আক্রোশ এবং অনৈতিক অর্থ আদায়ের লক্ষ্যে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিয়ে ভিকটিমকে এবং তার পরিবারকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও পারিবারিক মান সম্মান নষ্ট করেছে। উক্ত বিবাদীর কাছে ভিকটিমের আরো অশ্লীল ভিডিও ও ছবি আছে যা সে পর্যায়ক্রমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে ভিকটিমের মান সম্মান নষ্ট করে ফেলবে মর্মে হুমকি দিতে থাকে। বিবাদীর এরুপ কর্মকান্ডে সম্মান বাঁচাতে ভিকটিম আইনগত সহায়তা চেয়ে জাতীয় জরুরী সেবা “৯৯৯”এ কল দিলে “৯৯৯”ভিকটিমকে ২ এপিবিএন, মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহের সাইবার টিমেরসাথে যোগাযোগ করিয়ে দেয়। ভিকটিম ইং ০২/৯/২০২৩ তারিখ ২ এপিবিএন, মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহের অপস্ এন্ড ইন্টেলিজেন্স শাখায় উপস্থিত হয়ে বিস্থারিত ঘটনা জানায়।

তৎপ্রেক্ষিতে ২ এপিবিএন এর সাইবার টিম (মেটা-১/২/৩) বিবাদীর তৈরিকৃত ফেক ফেইসবুক আইডিতে ভাইরালকৃত ভিকটিমের ছবি ও ভিডিও রিমুভ করার জন্য ফেইসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করে। ইং ০৫/০৯/২০২৩ তারিখ দুপুরে উক্ত বিবাদীর Baba নামক ইমু আইডি থেকে ভিকটিমের Jannatul Bely নামক ইমু আইডিতে কল করে জানায় যে নালিতাবাড়ী থানাধীন আড়াইআনি এলাকায় ভিকটিম যদি দেখা না করে তাহলে বিবাদীর কাছে থাকা ভিকটিমের বাকী অশ্লীল ভিডিও ও ছবি ভাইরাল করে দেবে।

এরই ধারাবাহিকতায় ভিকটিম তার সম্মান বাচাতে বিবাদীর সাথে দেখা করতে রাজি হয় একই সাথে উক্ত বিষয়ে ২ এপিবিএন এর সাইবার টিমকে জানায়। বিবাদীর কথা মতো ভিকটিম ০৫/০৯/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ রাত্র ৮ ঘটিকায় বর্ণিত স্থানে যায়, অনুমান ১ ঘন্টা পরে উক্ত বিবাদী তার বন্ধু জনৈক সাকিব ও আরো এক জন সহ ইজিবাইক যোগে ভিকটিমকে নিতে পাঠায়। ভিকটিম উক্ত বিবাদীর কথামতো তাদের সাথে ইজিবাইকে করে খালভাঙ্গা গ্রামস্থ নদীর পাড় নামক নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করা উক্ত বিবাদীর কাছে গেলে তার বন্ধুরা ভিকটিমকে রেখে চলে আসলে উক্ত বিবাদী অনুমান রাত ০৯.৪৫ ঘটিকায় ভিকটিমকে জোর পূর্বক ধর্ষন করে।

২ এপিবিএন এর সাইবার ইউনিট এপিবিএন হেডকোয়ার্টার্সের সিআইএ শাখার উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় উক্ত বিবাদীর অবস্থান সনাক্ত করে এবং সাইবার টিমের (মেটা-১/২/৩) এসআই(নিঃ) মোঃ জামাল হোসেন সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ ইং ০৫/০৯/২০২৩ তারিখ ২২.১৫ ঘটিকায় শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী থানাধীন খালভাঙ্গা গ্রামস্থ জনৈক মোঃ চাঁন মিয়ার বাড়ীর সামনে হতে বিবাদী লাভলু আহম্মেদ কে আটক পূর্বক ভিকটিমকে উদ্ধার করে পরবর্তীতে আটককৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত ভিকটিমকে নালিতাবাড়ী থানা হেফাজতে দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে নালিতাবাড়ী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রুজু করা হয়।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম