
ভৈরব সংবাদদাতা:
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে চুরি ছিনতাই ও ডাকাতি প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে থানায় বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় কয়েক শ জনতা। শনিবার (২ আগস্ট) তারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) জন্য শাড়ি ও চুরি নিয়ে থানা ঘেরাও করে। এসময় ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার ফুহাদ রুহানী ও সেকেন্ড অফিসার এসআই এমদাদুল কবিরকে ছিনতাই বন্ধের জন্য ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। থানা ঘেরাওয়ের সময় ছাত্র ও যুব সমাজের নেতারা ছিনতাই বন্ধে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতার বিষয়ে প্রশ্ন করলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি ওসি।
এক পর্যায়ে ওসি ছাত্রদেরকে পাশ কাটিয়ে তার অফিস কক্ষে চলে যায়। পরে বিক্ষোভকারীদের কয়েকজন ওসির কক্ষে গিয়ে তার ব্যর্থতার কথা জানতে চান। এসময় ওসি খন্দকার ফুহাদ রুহানী তার ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে বলেন, রাজনৈতিক প্রটোকল দিতে গিয়ে ভৈরবের বিভিন্ন সড়কের ডিউটি দিতে হিমসিম খাচ্ছে পুলিশ। ছিনতাই রোধে কাজ করার ফলে এতদিন ছিনতাই অনেকটা কমে গিয়েছিল। হঠাৎ করে আবারও বেড়ে গিয়েছে। অচিরেই ছিনতাই রোধ হবে বলে বিক্ষোভকারীদের আশ্বস্ত করেন ওসি।
ওই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন ফেসবুক প্লাটফর্মে সরব থাকা ছাত্র ও যুব সমাজের এডমিন সাইফুর রহমান শাহরিয়ার, নূরে আলম নিলয়, আজাহারুল ইসলাম রিদম, নজরুল ইসলাম জিহাদ, জাহিদুর রহমান রাতুল, অনিক সরকার, মাহিন ইসলাম প্রমুখ। এসময় সমাবেশে ছাত্র ও যুব সমাজের নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি সচেতন সমাজের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন মনির হোসেন ও ছিনতাইকারীদের হাতে আহত যুবক পুলক আহমেদ।
প্রতিদিন ভৈরবের বিভিন্ন ছিনতাই স্পটে ছিনতাই হচ্ছে। কিন্তু পুলিশ ও র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলার বাহিনী আশানুরূপ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। এতে পুলিশ প্রশাসনেরই মুল ব্যর্থতা। তাই পুলিশের বিরুদ্ধেই এই কর্মসূচি। পুলিশকে হিজড়া উপাধি দিয়ে তারা পুলিশের জন্য শাড়ি ও চুড়ি নিয়ে আসেন উপহার দিতে। সাংবাদিকদের অনুরোধে তারা শাড়ি ও চুড়ি উপহার দেওয়া থেকে বিরত হন। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে যদি ছিনতাই বন্ধ না হয় পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দেন ছাত্র ও যুব সমাজের নেতারা। সকাল ৬টার দিকে ভৈরব শহরের রেলস্টেশন রোডের পৌর কবরস্থান মোড়ে দুর্ধর্ষ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এসময় ভুক্তভুগী একটি পরিবারের লোকজনকে ছুরিকাহত ও মারধর করে লক্ষাধিক টাকা, স্বর্ণালংকার ও তিনটি স্মার্টফোন ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনা টক অব দ্যা ভৈরবে পরিনত হয়। ফলে ভৈরববাসী ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভুমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিকাল সাড়ে ৪টায় পুলিশকে ভৈরববাসীর নিরাপত্তায় কাজ না করায় শাড়ি ও চুড়ি পড়ে ভৈরব থেকে চলে যাওয়ার আল্টিমেটাম দিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও থানা ঘেরাও করা হয়।