গণপূর্তের ঢাকা জোনের ইএম বিভাগে প্রকৌশলী আলমগীর খান সিন্ডিকেটের শত কোটি টাকা লোপাট!

স্টাফ রিপোর্টারঃ

গণপূর্ত অধিদপ্তরের ঢাকা জোনের ই/এম ডিভিশনে দুর্নীতি, অনিয়মের আখড়ায় পরিনত হয়েছে। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ কর্মকর্তারা বিদেশে পাচার করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।কয়েকজন ঠিকাদার, নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর খানের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে লুটপাট সিন্ডিকেট ।
এই সিন্ডিকেটে তার সহযোগী হিসেবে রয়েছে উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহিদ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজুমদার ট্রেডিং।

সিসি ক্যামেরা না লাগিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ, গাড়ি চালকের বেতন বাবদ ৮৭ লক্ষ টাকা অপচয়, জনবল থাকা সত্ত্বেও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেখিয়ে অর্থ লুটপাট এবং অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মত গুরুতর অপরাধের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সূত্র জানায়, সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায় কোনো সিসি ক্যামেরা স্থাপন না করেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা বিল পরিশোধ করেছে ই/ত্রম বিভাগ-৬। অপরদিকে ই/এম বিভাগ-৮ দুটি গাড়ির বিপরীতে ৩১ জন চালকের পেছনে বছরে অতিরিক্ত ব্যয় করেছে ৮৭ লাখ টাকা। ২০১৬-১৭ সালের অডিট রিপোর্টে এই অনিয়ম কতৃপক্ষের নজরে এলেও গণপূর্ত অধিদফতর কোন এক অজানা কারণে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি ।

অডিট রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড মেকানিক্যাল (ই/এম) বিভাগ-৬ ঢাকার নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয় ৩টি ১৬ চ্যানেল বিশিষ্ট ডিডিআর, ১২টি পিটিডোর ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা, ৩টি ডিসপ্লে মনিটর, ১০টি ডে নাইট ভিশন ক্যামেরাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মালামাল চুক্তি অনুযায়ী সরবরাহ ও স্থাপনের জন্য মাত্র দুদিনে একজন ঠিকাদারকে তিনটি কার্যাদেশ দেয়। উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর পত্র স্মারক নং- ৩৫০২ (তারিখ; ১৪-০৬-২০১৬) এবং স্মারক নং-৩৫০৭ ও ৩৫০৮ (তারিখ:১৫- ০৬-২০১৬)- এর মাধ্যমে চুক্তি মোতাবেক ঠিকাদারকে ১ কোটি ১৮ লাখ ৮১ হাজার টাকা।

চূড়ান্ত বিল পরিশোধ করা হলেও কাজ গুলো আজও সমাপ্ত হয়নি। একই বছরের ২০ অক্টোবর অডিট বিভাগের কর্মকর্তারা সাভারে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় সিসি ক্যামেরা গুলো ব্যবহার অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে। পর্যাপ্ত কারিগরি লোক থাকার পরও যন্ত্রগুলো কাজে আসচ্ছেনা অথচ বিদ্যুৎ বিল অস্বাভাবিক বলে অডিট রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী পর্যাপ্ত জনবল থাকার পরও দৈনিক মজুরি ও চুক্তিভিত্তিক জনবল নিয়োজিত রয়েছে, এতে সরকারের আর্থিক অপচয় হচ্ছে বলে অডিট বিভাগ জানিয়েছে।

এহেন সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন গণপূর্ত অধিদফতরের ই/এম ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর খান। তার বিরুদ্ধে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থে ঢাকা শহরে ও তার আশে একাধিক বাড়ী ও এ্যাপার্টমেন্ট, বাণিজ্যিক প্লট, আবাসিক প্লট ক্রয় এবং অবৈধ পথে উপার্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করারও অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

জনস্বাস্থ্যে ফের আলোচনায় ‘বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ’

নিজস্ব প্রতিবেদক:
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাম্প্রতিক পদোন্নতি প্রস্তাব নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। ১৫ জন কর্মকর্তার পদোন্নতির জন্য সুপারিশ করা হলেও, অভিযোগ উঠেছে- এই প্রক্রিয়ায় জ্যেষ্ঠতার ন্যায্যতা উপেক্ষিত হয়েছে।
খসড়া তালিকায় যাদের নাম রয়েছে, তাদের অধিকাংশই বিগত সরকারের সময়ে বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। এই ঘটনায় বঞ্চিতদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
পদোন্নতির প্রস্তাব করা কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল শাখার আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম মিয়া, সদস্য প্রকৌশলী এহতাশামুল রাসেল খান, সদস্য প্রকৌশলী বাহার উদ্দিন মৃধা, প্রকৌশলী নূর আহাম্মদ, প্রকৌশলী বিধান চন্দ্র দেসহ আরও কয়েকজনের নাম পদন্নতির জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বিগত সরকারের সময় সংস্থাটির নিয়োগ, পদোন্নতি, টেন্ডার – বানিজ্য নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ রয়েছে।
বিতর্কিত এসব কর্মকর্তাদের নাম প্রস্তাব করার পেছনে সংস্থাটির প্রধান প্রকৌশলী তুষার মোহন সাধু খাঁ’র জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। যিনি নিজেও বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের এক নম্বর সদস্য ছিলেন। এর আগে তিনি সারাদেশের নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ছিলেন। তখন তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।
এসব অভিযোগের পরেও এই কর্মকর্তাকে গত বছরের ২ এপ্রিল সংস্থার প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনেক অধিদপ্তরের দায়িত্বে নতুন মুখ আসলেও তিনি ভাগ্যবান। এ বিষয়ে তার মন্তব্য জানতে বার বার মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি তাই মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
সাধু খাঁ’র বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিগত সরকারের বিতর্কিত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে পদোন্নতির জন্য প্রস্তাব করেছেন।
জানা যায়, এর আগে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েও বিতর্কিত এসব কর্মকর্তাদের তালিকা পাঠানো হয়েছিল মন্ত্রণালয়ে। তবে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে পাঠানোয় সেবারও পদোন্নতির সেই প্রস্তাব বাতিল করা হয়।
নতুন প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (গ্রেড-৪) এর শূন্য পদে পদোন্নতি প্রদানের প্রস্তাব। উপর্যুক্ত বিষয়ে সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বিসিএস (জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল) ক্যাডার তফসিলভূক্ত ১৪টি এবং ক্যাডার পদ হিসেবে স্থায়ীভাবে সৃজিত একটি মোট ১৫টি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর পদ রয়েছে (সংযুক্তি-১ ও ২)। ওই ১৫টি পদের বিপরীতে একজন পুরাদস্তুর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আছেন, যিনি বর্তমানে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পূর্ত) পদে চলতি দায়িত্বে কর্মরত। ফলে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর ১৫টি শূন্য পদেই চলতি দায়িত্ব প্রদানের মাধ্যমে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর বিদ্যমান শূন্য পদগুলো সরকারি কাজের স্বার্থে দ্রুত পদোন্নতি প্রদানের মাধ্যমে পূরণ করা একান্ত প্রয়োজন।
আবেদনে আরও বলা হয়েছে, অত্র অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ১০/০৬/২০২৫খ্রি. তারিখে, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (চ.দা.) (পূর্ত) ১২/১১/২০২৫খ্রি. তারিখে অবসরোত্তর ছুটিতে গমন করবেন। বর্ণিত কর্মকর্তাদ্বয় অবসরোত্তর ছুটিতে গমন করলে অত্র অধিদপ্তরে প্রধান প্রকৌশলীর একটি পদ ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর তিনটি পদই শূন্য হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর আরো একটি পদ শূন্য হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর শূন্য পদ সংখ্যা দাঁড়াবে ১৪+১=১৫ টি।
এছাড়া প্রধান প্রকৌশলী ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শূন্য পদগুলো পূরণ করার মত কোন পুরাদস্তুর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অধিদপ্তরে বর্তমানে কর্মরত নেই। ফলে অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের পদসমূহে শূন্যতা সৃষ্টিসহ প্রশাসনিক জটিলতা দেখা দিবে। ফলশ্রুতিতে অধিদপ্তরের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা-৬ অর্জনে বাংলাদেশ সরকারের অগ্রাধিকারমূলক বিভিন্ন কর্মসূচি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হবে
স্থানীয় সরকার বিভাগের স্মারক নং-৬৮৫ তারিখ-০৩/১১/২০২২ মাধ্যমে ৬০ জন, স্মারক নং ৬৮৬ তারিখ-০৩/১১/২০২২ মাধ্যমে ০৩ জন, স্মারক নং- ২৮২ তারিখ- ১৮/০৪/২০২৪ মাধ্যমে ০১ জন এবং স্মারক নং-১৯৬ তারিখ- ২০/০৪/২০১৫ খ্রি. মাধ্যমে ০২ জন মোট ৬৬ জন সহকারী প্রকৌশলীকে নির্বাহী প্রকৌশলী এর শূন্য পদে পদোন্নতি প্রদান করায় অত্র অধিদপ্তরে বর্তমানে ৬৬ (ছেষট্টি) জন নির্বাহী প্রকৌশলী কর্মরত আছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদোন্নতির ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতার বিষয় পুরোপুরিভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানানো হলেও, এ ধরনের কোন তালিকা সংস্থাটিতে করা হয়নি। গ্রেডেশন তালিকা না থাকার কারনে ইচ্ছেমতো পদোন্নতির সুপারিশ করা যাচ্ছে।
কর্মকর্তাদের অভিযোগ, গ্রেডেশন তালিকা না থাকায় অতীতে অনেক জ্যেষ্ঠ্য কর্মকর্তা পদোন্নতি বঞ্চিত হয়েছেন। অপরদিকে অনেক জুনিয়র কর্মকর্তা তদবির ও অর্থের বিনিময়ে পদোন্নতি বাগিয়ে নিয়েছে। এবারও সেই ধারাবাহিকতায় এগুচ্ছে বর্তমান প্রশাসন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসে সড়ক নিরাপত্তা আইন দ্রুত প্রণয়নের দাবি তরুণদের মায়ামিতে লা লিগা যে কারণে বার্সেলোনার ম্যাচ বাতিল করলাে ট্রাইব্যুনাল থেকে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে পাঠানো হলো সাবজেলে খুলনার নদ–নদী থেকে এক বছরে ৫০ লাশ উদ্ধার হাজির করা হলো সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে বিদেশ থেকে যতটুকু স্বর্ণ আমদানি করলে দিতে হবে না ভ্যাট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎতে যাচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব ফকরুল বাংলাদেশে ইতিহাস গড়ল উইন্ডিজ দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন রাজউক ইমারত পরিদর্শক শামীম রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে কে জিতবে, তা নিয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচেছ ট্রাম্প