বিআইডব্লিউটিএ’র আরিফের কাণ্ড: লন্ডন-যুক্তরাষ্ট্র-এলিফ্যান্ট রোডে বাড়ি, বসুন্ধরায় ফ্ল্যাট, শতভরি স্বর্ণ, কয়েক কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট!

স্টাফ রিপোর্টার:

ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিউটিএ’র অতিরিক্ত পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয় আলাদাভাবে তার বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে।

তবে অভিযোগ বা তদন্তের তোয়াক্কা না করে বহাল তবিয়তে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন আরিফ। জানা গেছে, পাবনায় বাড়ি হওয়ায় রাষ্ট্রের শীর্ষ ব্যক্তির নামও ব্যবহার করে যাচ্ছেন তিনি। আবার কখনো ব্যবহার করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বিশেষ আত্মীয়ের পরিচয়ও।

দুদক এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আরিফ উদ্দিন বিআইডব্লিউটিএ’র বন্দর ও পরিবহন বিভাগে অতিরিক্ত পরিচালক এবং ল্যান্ড অ্যান্ড এস্টেট এর পরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। গুরুত্বপূর্ণ এলাকার বাসিন্দা এবং দুই দায়িত্ব নিয়োজিত থাকায় বিআইডব্লিউটিএ’র অধিকাংশ প্রকল্পে প্রভাব বিস্তার করে আসছেন তিনি। প্রভাব খটিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের ৩০১ নম্বর বহুতল একটি বাড়ি তিনি ২২ কোটি টাকায় কিনেছেন। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সি ব্লকের ২/এ নম্বর সড়কের ৪৭/৫৫ নম্বর হোল্ডিংয়ের যে অ্যপার্টমেন্টে তিনি বসবাস করছেন, সেটিও কিনতে খরচ করেছেন ছয় কোটি টাকা। আর অ্যপার্টমেন্টের সাজসজ্জায় খরচ করেছেন আরো চার কোটি টাকা। ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য কোটি টাকায় কিনেছেন গাড়ি। স্ত্রীর জন্যও আছে পৃথক গাড়ি। স্কলরশিপ ছাড়াই তার ছেলে পড়াশোনা করছেন যুক্তরাষ্ট্রে। মেয়েকে পড়াচ্ছেন লন্ডনে। লন্ডনের বিগবর্ণ সিটিতে মেয়ের জন্য কিনেছেন একটি বাড়ি। যুক্তরাষ্ট্রেও ছেলের নামে বাড়ি কিনেছেন বলে বিআউডব্লিউটিএ’র কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

সূত্র জানায়, পাবনার সুজানগর মৌজার বনখোলা, ঘেতুপাড়া, রামপুর, হাটখালী ও খেতুপাড়ায় অন্তত ২০০ বিঘা জমি কিনেছেন স্ত্রী শামীমা, সন্তান, ভাগ্নেসহ পরিবারের সদস্যদের নামে। অতিরিক্ত পরিচালক আরিফের বিরুদ্ধে রয়েছে নামে-বেনামে একাধিক ব্যবসায় অর্থলগ্নির অভিযোগ। বেনামে লাইসেন্স করে বিআইডব্লিউটিএ’র বড় বড় কয়েকটি ঠিকাদারী কাজও বাগিয়ে নিয়েছেন বলে সূত্র জানায়।

অভিযোগে আরো জানা গেছে, পাঁচটি বেসরকারি ব্যাংকে আরিফের রয়েছে কয়েক কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট। বরাদ্দ না থাকলেও বিআইডব্লিউটিএ’র একটি গাড়ি সার্বক্ষণিক ব্যবহার করছেন ব্যক্তিগত কাজে। স্ত্রী শামীমাকে কিনে দিয়েছেন অন্তত শতভরি স্বর্ণালংকার। ব্যক্তিগত আয়কর সার্টিফিকেটে এসব সম্পদের তথ্য তিনি গোপন করেছেন।

এর বাইরে বন্দর ও পরিবহন বিভাগের আওতাধীন ঘাট ইজারা নিয়েও আরিফের বিরুদ্ধে রয়েছে ভয়াবহ অভিযোগ। পছন্দের ইজারাদারকে দিয়ে মামলা করিয়ে ইজারা স্থগিত করে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আরিফ। ফোরশোর নবায়নেও ইচ্ছামতো উৎকোচ আদায় করেন তিনি। বিআইডব্লিউটিএ’তে যা ওপেন সিক্রেট ঘটনা।

আরিফ উদ্দিনের এসব অভিযোগ বিষয়ে দুদকের উপ-পরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন রেকর্ডপত্র তলব করে একটি চিঠিও দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক প্রশাসনকে।দুদক জানায়, বিআইডব্লিউটিএ’র আওতায় নারায়ণগঞ্জ পোর্ট থেকে ১ জানুয়ারি ২০১৯-৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ সাল পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের হিসাবের বিবরণী, আরিফ উদ্দিনের ব্যক্তিগত নথি, চাকরির মেয়াদে উত্তোলিত বেতন-ভাতার বিবরণ, দাপ্তরিক দায়দায়িত্ব সম্পর্কীত অফিস আদেশ, তার স্ত্রী শামীমা, দুই সন্তান, ভাগ্নের নামে ব্যবসা এবং শেয়ার পরিচালনার আবেদন এবং অনুমোদন সংক্রান্ত সব ধরনের কাগজপত্র তলব করেছে দুদক।

অবশ্য এসব অভিযোগের বিষয়ে অতিরিক্ত পরিচালক আরিফ উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করে দ্য মিরর এশিয়া। তিনি বলেন, দাপ্তরিক কাজে মিটিংয়ে আছেন। পরে কথা বলবেন। কখন কথা বলবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দু-এক দিন পরে সরাসরি আসেন।

ইসরাইলের ৩ লক্ষ্যবস্তুতে ইয়েমেনের ড্রোন হামলা

ইসরাইলের ৩ লক্ষ্যবস্তুতে ইয়েমেনের ড্রোন হামলা

আন্তর্জাতিক রিপোর্ট:

ইসরাইলের তিনটি লক্ষ্যবস্তুতে সফল ড্রোন হামলা চালানোর দাবি করেছে ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী। লক্ষ্যবস্তুগুলো হলো—বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর, বিরশেভা এবং আশকেলন। খবর মেহের’র।

ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ঘোষণা করেছেন, তারা ইসরাইলি লক্ষ্যবস্তুতে তিনটি তিনটি সফল অভিযান পরিচালনা করেছে।

আল-মাসিরাহ নেটওয়ার্ক অনুসারে, ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা তিনটি সামরিক অভিযান চালিয়েছি, প্রতিটিতে একটি করে ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। ’

তিনি বলেন, ‘এই ধারাবাহিক অভিযানে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরসহ বিরশেভা এবং আশকেলনের দুটি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে।’

সারি দাবি করেন, ‘এই অভিযানে লক্ষ্যবস্তুগুলো সফলভাবে আঘাত হেনেছে।’

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘এই তিনটি অভিযান অত্যাচারিত ফিলিস্তিনি জনগণ ও তাদের যোদ্ধাদের সমর্থনে এবং গাজায় শত্রু বাহিনীর গণহত্যা ও খাদ্য অবরোধের প্রতিক্রিয়ায় চালানো হয়।’

সারি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন, ‘যারা দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের বন্দরগুলোর সঙ্গে ব্যবসায়িক সহযোগিতা করছে তাদের জাহাজগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু বানানো হবে।’

ইয়াহিয়া সারি এসব কোম্পানিকে নিজেদের জাহাজ ও ক্রুদের নিরাপত্তার স্বার্থে দখলকৃত ভূখণ্ডের বন্দরগুলোর সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানান।

ইয়েমেনের এ ড্রোন হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি ইসরাইল।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম