বিয়ের নাটক করে চুরিই যাদের পেশা

স্টাফ রিপোর্টার:

বাবা-মায়ের আদরের সন্তান শাখাওয়াত হোসেন শাকিল৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুই বছর আগে পরিচয় গলাচিপা কলেজ রোডের বিথী আক্তারের সাথে৷ এরপর প্রণয়, প্রেম। সম্পর্ক গড়ায় বিয়ে পর্যন্তও৷ বিথী নিজেকে পরিচয় দেন কুমারী হিসেবে। কিন্তু সেই বিয়ে রীতিমতো দুঃস্বপ্নে রূপ নিয়েছে শাকিলের জীবনে৷ বিথী দুই দফায় তার সর্বস্ব হাতিয়ে নিয়ে এখন পলাতক৷ ভালোবেসে বিয়ে করা স্ত্রীর খোঁজ নিতে গিয়ে সুমন যা যা জেনেছেন, তাতে নিজেকেই এখন আর বিশ্বাস করতে পারছেন না।

শাকিল জানান, বিথীর কমপক্ষে চারটি বিয়ে হয়েছে, রয়েছে ক্লাস নাইন পড়ুয়া একটি মেয়েও। বিয়ের নাটক সাজিয়ে স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয়াই বিথীর পেশা। আর এই অপকর্মে বিথীর রয়েছে একটি চক্র৷ এই চক্রে আছে বিথীর তথাকথিত স্বামী ইসমাইল (৪২), মেয়ে কলি (১৪)সহ আরো কয়েকজন৷

সর্বশেষ গত ২৫ ফেব্রুয়ারী শাকিলের অনুপস্থিতিতে বাসা থেকে এক ভরি স্বর্ণ ও নগদ ৬৫ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে বিথী৷ আর এই অপকর্মে বিথীকে সহযোগিতা করেছে তারই তথাকথিত স্বামী ইসমাইল ও বোন লতা৷ এরপর থেকেই বিথী ও তার পরিবারের সকলের নাম্বার বন্ধ, ভাড়া বাসা ছেড়ে তারা চলে গিয়েছেন অন্যত্র। এর আগে আরো একবার শাকিলের বাসা থেকে মোটা অঙ্কের টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায় বিথী৷ ওই দফায় শাকিল অনেক কষ্টে বিথীকে খুঁজে বের করে নিজ পরিবারকে মানিয়ে ফের সংসার শুরু করে।

শাকিল আরো জানান, বিয়ের নাটকের পরে বিথী তাকে নিয়ে কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়িয়েছেন৷ সেসব স্থানে শাকিলকে স্বামী হিসেবে পরিচয় করিয়েছেন। কিন্তু পরবর্তীতে শাকিল জানতে পারেন, এটি বিথীর চতুর্থ বিয়ে। জেলা এবং জেলার বাইরে এর আগেও এভাবেই বিয়ের নাটক সাজিয়ে স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বিথী৷ কেউ এসবের প্রতিবাদ করলে তাকে হামলা-মামলা করতেও পিছপা হয় না এই চক্র।

সব হারিয়ে শাকিল এখন ঘুরছেন পথে পথে। প্রতারক বিথীকে বিয়ে করায় পরিবারও তাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে৷ আর এদিকে বিথী ও তার প্রতারক চক্রের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে শাকিল ঘুরে বেড়াচ্ছেন দ্বারে দ্বারে৷

এ বিষয়ে জানতে বিথীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। অভিযুক্ত ইসমাইলের নাম্বারে একাধিক কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি৷ পরিচয় দিয়ে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও সাড়া দেননি তিনি৷

চাঁদমারীতে নাসিম উসমান মসজিদ নিয়ে ডিসির বিতর্কিত ভূমিকায় এলাকায় ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সরকারী নির্দেশ উপেক্ষা করে ফতুল্লার পশ্চিম চাঁনমারী এলাকার পতিত সরকারি জমিতে নামাজ আদায়ের অনুমতি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসকের বিতর্কিত ভুমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তা বন্ধের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। তাদের ভাষ্য এই এলাকার জেলা প্রশাসকের নিজস্ব ২টি মসজিদ সহ মোট ছয়টি মসজিদ রয়েছে। এতো মসজিত থাকার পর সরকার যেখানে এই মসজিদটি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে সেখানে এমন নির্দেশের তোয়াক্কা না করে জেলা প্রশাসক সেখানে পুনারায় নামাজ আদায়ের কোনো অনুমতি দিলেন তা রহস্যজনক।

এখানেই শেষ নয়, ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, এ বিষয়ে তারা জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করতে গেলে তিনি নাসিম ওসমানের পক্ষ নিয়ে ভুক্তভোগিদের ধমক দিয়ে বলেন, ‘এতো জেনেসাইড’ জেনোসাইড করেন কেন? ভিন্ন মতাবলম্বী কি থাকবে না নাকী? তার এমন মন্তব্যে পর এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

এ নিয়ে ইতোমধ্যে জন প্রশাসন মন্ত্রনালয় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এলাকা বাসীর পক্ষে নাহিদ ইসলাম নামক ব্যক্তির করা অভিযোগে বলা হয়, ‘আমাদের এলাকাটি চানমাড়ি টেক্সি স্ট্যান্ডের পার্শ্বে অবস্থিত। এখানে চানমাড়ি টেক্সি স্ট্যান্ডে পূর্বেই মহাসড়কের জায়গা দখল করে জোর পূর্বক নির্মিত “নাসিম উসমান মসজিদটিকে বর্তমান সরকার ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দিলে ফকির গার্মেন্টস সড়কের শুরুতে খতিয়ান ১৪৫, সি,এস, এস,এ-৭২, আর,এস-১৩৬ নং দাগের ৩৩ শতাংশ খাস ভূমিতে আমাদের নারায়ণগঞ্জ জেলার বর্তমান জেলা প্রশাসক জুলাই আগস্ট-জেনোসাইডে সরাসরি অংশগ্রহণকারী নাসিম উসমানের দলীয় লোকজনের সাথে বৈঠক করে এবং প্রকাশ্যে নিরীহ লোকজনকে “এতো জেনেসাইড” জেনোসাইড করেন কেন? ভিন্ন মতাবলম্বী কি থাকবে না নাকী? এ ধরনের মন্তব্য করার পর হইতে এলাকার মধ্যে বিশাল বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। এলাকার ৩/৪টি গ্রুপ তৈরী হয়ে মারমুখি অবস্থানে সকাল বিকাল মিছিল স্লোগান সহ বর্তমান জেলা প্রশাসকের বিগত সরকার দলীয় লোকজনের প্রতি অতিরিক্ত আনুগত্য জনমনে অশান্তির সৃষ্টি করেছে’।

‘এখানে উল্লেখ্য যে, এই এলাকার জেলা প্রশাসকের নিজস্ব ২টি মসজিদ সহ মোট ছয়টি মসজিদ রয়েছে। চানমাড়ী ট্যাক্সী ষ্ট্যান্ডেই উক্ত নাসিম উসমান মসজিদ লাগোয়া একটি মডেল মসজিদ নির্মিত হতে যাচ্ছে’।

‘শুধুমাত্র বিগত সরকারের লোকজনের প্রভাব বিস্তারের জন্য নাম পরিবর্তন পূর্বক নতুন নামে মসজিদ নির্মান করে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করাই উদ্দেশ্য’। ‘ফকির পার্মেন্টস সড়কটি রাজউক প্লানে ৬ মিটার ১৮ ফুট প্রস্থে থাকলেও বিগত সরকার দলীয় লোকজন অবৈধভাবে জায়গা দখল করে দোকান নির্মানের কারনে প্রন্থে দশ ফুট অবশিষ্ট রয়েছে’।

‘জায়গাটি মানুষের বাসা বাড়ির মাঝখানে উঠানের মত, যেখানে অগনিত মহিলা ও শিশু যাতায়াত করে। যা পুরুষদের জন্য মসজিদ হওয়ার উপযুক্ত নয়’।

‘বিগত সরকারের দলীয় খাস লোক রহমত উল্লাহ্ বোখারী ও সেলিম উসমানের একান্ত বন্ধু মনির এর নেতৃত্বে তাদের লোকজন কে টুপি পাঞ্জাবী পরিয়ে এলাকার লোকজন বানিয়ে সংকীর্ন প্লেসে উক্ত “নাসিম উসমান মসজিদের পুনঃ স্থাপন চেয়ে সকাল বিকাল স্লোগান, মিটিং মিছিল করে। এলাকার উক্ত মসজিদ নির্মানে বাধাদান কারী নিরীহ লোকজনকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ নির্যাতন, নিপীড়ন চালাচ্ছে। যাহার ভিডিও ফুটেজ বিদ্যমান আছে’।

‘একজন জেলা প্রশাসক বরাদ্দ ব্যতীত কিভাবে একজন লীজ গ্রহিতা বিদ্যমান থাকা অবস্থায় আগামী শুক্রবার নিজে উপস্থিত থেকে উক্ত প্লেসে জুম্মার নামাজ আদায় করে ভিত্তি প্রস্থড় স্থাপনের মৌখিক নির্দেশ দিতে পারে, যা কখোনই আইন সংগত নয়’।

‘এই ফকির গার্মেন্টস সড়কে গার্মেন্টস সহ বিভিন্ন ফ্যাক্টরী চলমান আছে। যেখানে এমনেতেই সংকীর্ণ রাস্তার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে তার উপর রাস্তাটি মসজিদ নির্মানের কারণে আরও সংকীর্ণ হয়ে গেলে ফ্যাক্টরীর উৎপাদন সহ মহিলা শিশুদের চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে যাবে’।

‘এমতাবস্থায় জনাবের নিকট বিনীত অনুরোধ আমরা এলাকার নিরীহ লোকজন কোনভাবেই এই বর্তমান জেলা প্রশাসক সহ এই বিগত সরকারের দলীয় দুস্কৃতিকারীদের সাথে পেরে উঠছিনা। যেখানে এলাকায় আরও ছয়টি মসজিদ রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিদ্যমান, তাই এই ধরনের খাস ভূমি বরাদ্দ ব্যতিত এবং জনৈক ব্যক্তির নামে লীজ থাকাবস্থায় জেলা প্রশাসক নিজে স্ব-শরীরে আগামী শুক্রবার জুম্মার নামাজে উপস্থিত থেকে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের মৌখিক নির্দেশ দিয়ে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে পরিবেশ ভারসাম্যহীন না করার জন্য আসু পদক্ষেপ নিতে জনাবের একান্ত মর্জি হয়’।
এবিষয়ে মন্তব্য জানতে জেলাপ্রশাসককে বার বার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননী।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম